শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: কোচবিহা (Cooch Behar News) তৃণমূলের (TMC) ছাত্রনেতা মাজিদ আনসারি খুনের ঘটনায় প্রাক্তন তৃণমূল নেতা মুন্না খান সহ ৭ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করল আদালত। রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে নিহতের পরিবার। অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় তৃণমূলের সমালোচনা করেছে বিজেপি। মন্তব্যে নারাজ শাসকদল।
চার বছর আগের খুনের মামলায় বেকসুর খালাস ৭
হাওড়ার ছাত্রনেতা আনিস খানের (Anis Khan Death) রহস্যমৃত্যুর এখনও কিনারা হয়নি। তা নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানউতোরের মধ্যেই কোচবিহারে তৃণমূলের ছাত্রনেতা খুনের ঘটনায় বেকসুর খালাস পেলেন সাত অভিযুক্ত।
কোচবিহার জেলা দায়রা বিচারক পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে বুধবার যে ৭ জনকে নিঃশর্তে মুক্তি দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মহম্মদ কলিম, যিনি মুন্না খান নামে পরিচিত, তিনি প্রাক্তন তৃণমূল নেতা। আইনজীবী আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, "সাত জন বেকসুর খালাস। পুলিশ ভাল কাজ করেনি। তাই বেকসুর খালাস।"
২০১৮ সালের ১৩ জুলাই কোচবিহারের রেলগুমটি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন কোচবিহার কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাজিদ আনসারি। কোচবিহার কলেজের টিএমসিপি ইউনিটের কনভেনর ছিলেন তিনি। ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর ২৫ জুলাই হাসপাতালে মাজিদের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: Coochbehar : অধিগ্রহণের ভাবনা, কোচবিহারে ক্যান্সার সেন্টার পরিদর্শন রাজ্য সরকারের নিযুক্ত বিশেষ দলের
খুনের নেপথ্যে উঠে আসে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ। কোচবিহার কলেজের ছাত্র সংসদ কার দখলে থাকবে, সেই টানাপোড়েনেই মাজিদকে খুনের অভিযোগ ওঠে। টিএমসিপি নেতা খুনে নাম জড়ায় তৃণমূলের তৎকালীন জেলা কোর কমিটির সদস্য মহম্মদ কলিম ওরফে মুন্নার।
এই মামলায় সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য, "২৬ জন সাক্ষী ছিলেন। ২৪ জনই আদালতে এসে কিছু বলেননি। বাকি ২ জনের সাক্ষ্য আদালত বিশ্বাস করেনি। তাই ৭ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।"
এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন নিহত ছাত্রনেতার দাদা সাজিদ আনসারি। তিনি বলেন, "এই রায়ে খুশি নই। আমরা হাইকোর্টে যাব। দরকারে সুপ্রিম কোর্টে যাব। সাক্ষীদের প্রভাবিত করা হয়েছে।"
উচ্চ আদালতে যাওয়ার ভাবনা পরিবারের
সেই নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। কোচবিহারে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, "তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল সর্বত্র। তার জেরেই ঘটনা। মাজিদকে দিনে গুলি করা হয়। পুলিশ কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। দুষ্কৃতীরা বেকসুর খালাস। আমিও একমত সাক্ষীদের প্রভাবিত করা হয়েছে।"
অন্য দিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "আইনের ব্যাপার। তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।" এই মুহূর্তে উচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে নিহত ওই ছাত্রের পরিবার।