কোচবিহার: সীমান্ত এলাকায় যুবককে গুলি করে খুনের অভিযোগ। কাঠগড়ায় ফের সীমান্তরক্ষীবাহিনী (BSF Firing)। পুলিশের তরফে ভারতীয় ওই যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। নিহত যুবককে ২৪ বছরের প্রেম বর্মন বলে শনাক্ত করা গিয়েছে (Cooch Behar News)। বিএসএফ-এর দাবি ওই যুবক গরুপাচারে যুক্ত ছিলেন। যদিও বিএসএফ-এর অভিযোগ মানতে নারাজ যুবকের পরিবার।


বিএসএফ-এর অভিযোগ মানতে নারাজ যুবকের পরিবার


কোচবিহারের দিনহাটায় এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গীতালদহে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ গুলি চালায়। তাতে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। তাঁর বাড়ির গীতালদহেরই বারবান্ধায়। 


এসএফ যদিও ওই যুবক গরুপাচারে যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করছে, কিন্তু নিহতের পরিবার জানিয়েছে, বেঙ্গালুরুতে শ্রমিকের কাজ করতেন প্রেম। দিন দুয়েক আগে বাড়ি ফেরেন তিনি। শনিবার জমিতে চাষের কাজ দেখতে যান। তখনই পাচারকারী সন্দেহে ওই যুবককে গুলি করে বিএসএফ। পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দিনহাটা থানার পুলিশ।


এই নিয়ে চলতি বছরে একইভাবে পাঁচজনের প্রাণ গেল কোচবিহারে। এর আগে, গত ১৭ মার্চ মাথাভাঙায় বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসে। তার পর সিতাইয়ে ১০ এপ্রিল আরও একজনের মৃত্যু হয়, মেখলিগঞ্জে ১৪ ডিসেম্বর মারা যান একজন। ১৫ ডিসেম্বর আবার মাথাভাঙায় আরও এক বাংলাদেশির মৃত্য়ু হয়।


আরও পড়ুন: Birbhum News: দিদিকে বিবাহবিচ্ছেদ দিতে নারাজ জামাইবাবু, তরোয়ালের কোপ মেরে খুনে অভিযুক্ত শ্যালক


বিএসএফ-এর দাবি, এদিন সকালে ওই এলাকা দিয়ে গরুপাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। তখন বাধা দিলে, পাল্টা হামলা চালায় পাচারকারীরা। এরপরই রবার বুলেট ছোড়া হয়। তাতেই মৃত্যু হয় যুবকের। কিন্তু নিহতের বাবা বলেন, "বেঙ্গালুরু থেকে এসেছিল ও। আমার তামাকের ক্ষেতে গিয়েছিল। জানতাম না। গুলির শব্দ শুনতে পাই গরুপাচারকারী সন্দেহে গুলি করা হয়েছে। পরশু কাজে ফেরত যাওয়ার কথা ছিল। আমার ছেলে গরু পাচার করে না।"


গুলিবিদ্ধ হয়ে যেখানে যুবকের মৃত্যু হয়েছে, সেখান থেকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার। এখানেই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, গরু পাচার আটকাতে সীমান্ত থেকে এত দূরে কেন গুলি চালাল বিএসএফ?


এই নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, "গরুপাচারকারী হলেও গুলি করে মারতে হবে নাকি? পাচারকারী তকমা লাগাচ্ছে। বিএসএফ অত্যাচার করছে। স্থানীয়দের শ্লীলতাহানি করছে। গরুপাচারকারী হলে গরু উদ্ধার হয়েছে কি?"


গুলিবিদ্ধ হয়ে যেখানে যুবকের মৃত্যু হয়েছে, সেখান থেকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার


বিএসএফ-এর ভূমিকায় সরব কংগ্রেসও। দিনহাটা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য দীননাথ বর্মন বলেন, "এখানে সন্ধের পর বিএসএফ-এর ভয়ে মানুষ বেরোতে ভয় পান। ও তো চাষ করতে গিয়েছিল! তিন কিলোমিটার দূরে কেন গুলি চালাল?"


যদিও রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "শুধুমাত্র সন্দেহের বশে গুলি করা যায না, নিশ্চয়ই কিছু তারা দেখতে পেয়েছিলেন। তবে রাজ্যের নেতারা যেভাবে বিএসএফ-কে লাগাতার আক্রমণ করে আসছে, তারা এই ঘটনাকে সেই হিসেবেই কাজে লাগাতে চাইছে না তো।"