শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : আমি মুক্ত! ফেসবুকে লিখলেন কোচবিহারের (Cooch Behar) সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া। কিন্তু কেন লিখলেন? তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে! তাৎপর্যপূর্ণভাবে আজই দলের নেতা-কর্মীদের সোশাল মিডিয়ার ব্যবহার সম্পর্কে সংযত থাকার বার্তা দেন কোচবিহার জেলা তৃণমূলের নতুন সভাপতি। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া মেলেনি তৃণমূল বিধায়কের।


'I am free'। কোচবিহারের দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ যেদিন মন্ত্রী হলেন, সেদিনই ফেসবুকে এই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করলেন সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া। ২০১১’র আগেই জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া যোগ দেন তৃণমূলে। তা সত্বেও জেলার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ না পাওয়া কিংবা মন্ত্রিসভায় জায়গা না পাওয়ায় তিনি কি ক্ষুব্ধ? কেন এই পোস্ট করলেন তিনি? প্রতিক্রিয়া মেলেনি সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়কের।


তবে সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠ মহলে জগদীশ জানিয়েছেন, জেলায় সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদের প্রত্যাশী ছিলেন তিনি। কিন্তু, আপাতত নিজেকে সিতাই বিধানসভার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান। সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়কের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ার পর, সে ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি কোচবিহার জেলা তৃণমূলের নতুন সভাপতি।


বার্তা নতুন সভাপতির


তবে এদিন দলের অনুষ্ঠানে নেতা-কর্মীদের সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করে দেন তিনি। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেছেন, 'দলে থেকে দলের কর্মীদের সঙ্গে লড়াই করা কিন্তু চলবে না, দলের কথা, দলের লড়াইয়ের কথা ফেসবুকে পোস্ট করা, দলের লড়াইয়ের কথা এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে গ্রুপে শেয়ার করা, এই জিনিস বন্ধ হয়ে গেছে গত ২ দিন থেকে, এটা করা যাবে না। যারা করবেন, কমপ্লিট নিজের দায়িত্বে করবেন। যারা দল করতে চায়, আপনার পছন্দ হোক, অপছন্দ হোক, তাঁদেরকে স্পেস দিতে হবে, প্রত্যেকের নিজস্ব জায়গা আছে।'


দ্বন্দ্ব নতুন নয়


এই প্রথম নয়, গত এপ্রিলে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের নতুন কোর কমিটি গঠন হয়। সেখানে ঠাঁই পাননি প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আর এরপরই তাত্‍পর্যপূর্ণভাবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ফেসবুক পোস্টে লেখেন, আমি এখন মুক্ত বিহঙ্গ। এবার জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া লিখলেন, I am free। এই সুযোগে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি।


কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেছেন, 'এতো মিউজিক্যাল চেয়ার। তাই এসব লিখছেন ফেসবুক, নতুন কিছু নেই., কোচবিহারে কোন্দল ঠেকাতে পারবে না।' লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহারে আধিপত্য বজায় রাখতে পেরেছে বিজেপি। এবার সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তৃণমূল কি পারবে, ঘর সামলে পুরনো জমি ফিরিয়ে আনতে? বড় চ্যালেঞ্জ কোচবিহার জেলা তৃণমূলের নতুন সভাপতির সামনে।


আরও পড়ুন- 'নেপথ্যে বিশাল প্রভাব' শিক্ষক বদলি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের