শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: শনিবার কোচবিহারের ( Cooch Behar ) দিনহাটায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ( Nisith Pramanik ) কনভয়ে হামলার অভিযোগকে ঘিরে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি ( West Bengal Politics )। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন নিশীথ প্রমাণিক। দিলেন কড়া বার্তা। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়ে হামলাকাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও অমিত শাহের ( Amit Shah ) ডেপুটি নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার অভিযোগে ফুটছে দিনহাটা। শনিবার, দিনহাটার বুড়িরহাটে আক্রান্ত হয় নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়। কাচ ভাঙে মন্ত্রীর গাড়ির। ওঠে গুলি চালানো ও বোমাবাজির মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। শনিবার, নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার পরই, সাহেবগঞ্জে বিজেপির পার্টি অফিসে ভাঙচুর এবং একাধিক বিজেপি নেতার বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে।
সেই ঘটনার রেশ ধরেই এবার তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমাকে আক্রমণ করা মানেই কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করা!' পাল্টা আক্রমণে তৃণমূলের দাবি, গন্ডগোল, হিংসার মাধ্যমে প্রচারে থাকার চেষ্টা করছে বিজেপি।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার প্রতিবাদে শনিবারই রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কড়া বিবৃতি দিয়েছে রাজভবন। সেখানে রাজ্যপাল জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করেছেন এবং সরাসরি নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। শনিবারের ঘটনার পর যেভাবে বিভিন্ন দিক থেকে ৩৫৫ ধারা জারির দাবি উঠেছে, তার প্রেক্ষিতে রাজভবন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, এটা খুব বেদনাদায়ক যে, এমন ঘটনা সেই বাংলার মাটিতে ঘটল, যে মাটি সংস্কৃতি এবং সভ্যতার ঐতিহ্য বহন করে।
রাজ্যপাল তাঁর বার্তায় উল্লেখ করেন, রাজ্যে কখনও কোথাও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে রাজ্যপাল চুপ থাকবেন না।বরং শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে কঠোর ও কার্যকরী পদক্ষেপ করা হবে। এরই সঙ্গে নবান্নকে সতর্ক করে দিয়ে রাজ্যপাল বলেছেন, আইনের শাসন বজায় রাখতে ও দুষ্কৃতীদের মোকাবিলায় অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করবে রাজ্য সরকার। ভবিষ্যতে যে কোনও সমস্যার মোকাবিলায় সময়মতো পদক্ষেপ করা হবে। শনিবারের ঘটনায়, কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, প্রশাসনের কাছে তার রিপোর্টও তলব করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রতিবাদ গণতন্ত্রের একটা অংশ, কিন্তু হিংসা কখনই সভ্য সমাজে স্বীকৃত নয়। যে কোনও অশান্তি রুখতে গিয়ে, পশ্চিমবঙ্গ যাতে কোনওভাবেই 'দুর্বল রাজ্য' (soft state) না হয়ে পড়ে, রাজ্যপাল হিসেবে তা দেখার দায়িত্ব আমার।যাঁরা আইন হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। হিংসাকে নির্মূল করতে হবে। বাংলার মানুষ আশা করেন, পুলিশ ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা, প্রত্যেকে নির্ভয়ে ও নিরপেক্ষভাবে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে কোনওরকম শিথিলতা, বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য তৈরি করবে। যা কখনই মেনে নেওয়া হবে না। কোনও পরিস্থিতিতেই গুন্ডাবাহিনীকে সমাজের ক্ষতি করতে দেওয়া যাবে না।
এরপর মুখপত্রে রাজ্যপালের কড়া সমালোচনা করে তৃণমূল। লেখা হয়, 'জগদীপ ধনকড়ের পথ দ্রুত অনুসরণের পথে নেমে পড়েছেন বর্তমান রাজ্যপাল, রাজ্যপাল একতরফা বিজেপির কথা শুনে বিবৃতি দিচ্ছেন। মনে রাখতে হবে রাজ্যপাল বিজেপির ক্যাডার ছিলেন' রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিয়ে ঝাঁঝালো প্রতিক্রিয়া বের হয়েছে তৃণমূলের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'য়।