শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: রাজ্যে প্রথমবার কৃত্রিম উপায়ে ঘড়িয়ালের ডিম ফুটিয়ে বংশবিস্তারের নিদর্শন পাওয়া গেল কোচবিহারের রসিকবিল চিড়িয়াখানায়। বছর খানেক আগেও চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেবার সফল হয়নি পদ্ধতি। ফের একবার নতুন করে প্রচেষ্টা শুরুর পর কৃত্রিম উপায়ে ডিম ফুটিয়ে বাইশটি শিশু ঘড়িয়ালের জন্ম হল।
কৃত্রিম উপায়ে ডিম ফুটিয়ে ঘড়িয়ালের জন্ম-
কোচবিহারের রসিকবিল চিড়িয়াখানা সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে মিনি জু-তে অবস্থিত ঘড়িয়াল পার্কে ডিম ডেয় ঘড়িয়াল। সেইদিনই রসিকবিলের কর্মীরা সযত্নে তা তুলে নিয়ে আসেন। কৃত্রিম উপায়ে ডিমগুলি ফোটানোর ব্যবস্থা করা হয়। সম্প্রতি সেই ডিম ফুটে বাইশটি শিশু ঘড়িয়ালের জন্ম হয়েছে। কৃত্রিম উপায়ে ডিম ফুটিয়ে শিশু ঘড়িয়ালের জন্ম হওয়ায় উচ্ছ্বসিত বনকর্মীরা। কোচবিহারের বিভাগীয় বন আধিকারিক সঞ্জিত কুমার সাহা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, রাজ্যে প্রথমবার এই ধরনের প্রচেষ্টার সাফল্য এল। আর এই সাফল্যের পুরোটাই তিনি দিচ্ছেন রসিকবিলের কর্মীদের।
কীভাবে কৃত্রিম উপায়ে জন্ম হল শিশু ঘড়িয়ালগুলির-
তিনি আরও জানাচ্ছেন, ডিমগুলি তুলে নিয়ে এসে রাখা হয়েছিল একটি ঘরে। সেখানে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বালি রেখে তার উপর ফোটানো হয় ডিম। মোট ৬৬টি ডিম ছিল। তার মধ্যে বাইশটি ঘড়িয়ালের জন্ম হয়েছে। ঘড়িয়ালের জন্মের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। ১৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে তাপমাত্রা থাকতে হয়। এছাড়াও আপেক্ষিক আর্দ্র্যতা থাকতে হয় ৭৫ -এর মধ্যে। বিভাগীয় বন আধিকারিক জানাচ্ছেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা সবসময় এসবের খেয়াল রেখেছেন। একটি ঘড়িয়ালের ডিম থেকে বাচ্চা হতে সময় লাগে মোটামুটি বাহাত্তর দিন। ১৮ মার্চ ঘড়িয়াল ডিম দেয়, সেগুলোকে সযত্নে হ্যাচিং রুমে নিয়ে আসা হয়, ২৫ মে ডিম ফুটে জন্ম নেয় বাইশটি ঘড়িয়াল শিশু।
আরও পড়ুন -
বিভাগীয় বন আধিকারিক সঞ্জিত কুমার সাহা বলেন " আমাদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এই শিশু ঘড়িয়ালগুলির যত্ন নেওয়া হবে। যতদূর জানি রাজ্যে কোথাও এর আগে ঘড়িয়ালের এই ধরনের ব্রিডিং হয়নি। এটাই প্রথম। এটা কোচবিহারের মানুষের কাছে খুশির খবর"। বর্তমানে এই ঘড়িয়াল পার্কে ১১ টি ঘড়িয়াল রয়েছে। বাইশটি ঘড়িয়াল বড় হলে, পর্যটকদের কাছে এই প্রার্থীর আকর্ষণ আরও বাড়বে বলে মনে করছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।