কোচবিহার: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রার এক সপ্তাহের মধ্যে সিতাইয়ের গোসানিমারিতে তৃণমূলে ভাঙন। নিশীথ প্রামাণিকের উপস্থিতিতে গতকাল বিজেপিতে যোগ দিলেন গোসানিমারি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ পঞ্চায়েত সদস্য, সিতাই পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য-সহ প্রায় ৫০০ তৃণমূল কর্মী। ২৫ এপ্রিল গোসানিমারিতে অভিষেকের সভাস্থল থেকে দেড়শো মিটার দূরে বিজেপির যোগদান কর্মসূচি ছিল। অভিষেক কোচবিহারে যেখানে যেখানে গিয়েছেন, সেখানেই তৃণমূলে ভাঙন ধরাব, চ্যালেঞ্জ ছোড়েন নিশীথ প্রামাণিক। সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বর্মা বাসুনিয়ার কটাক্ষ, পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পাবে না বুঝেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান।
অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও তৃণমূলে ভাঙন। মগরাহাটে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন প্রাক্তন ব্লক সাধারণ সম্পাদক-সহ ৫০০ জন কর্মী সমর্থক। প্রথম দিন থেকে দলে থাকলেও, গুরুত্ব না পাওয়ার অভিযোগ। যদিও এই দলবদলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল! সাগরদিঘি উপনির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দিয়েছেন অধীর চৌধুরী।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে সিপিএম-কংগ্রেসে যোগদানের হিড়িক অব্যাহত! কোচবিহার, মালদা, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনার পর এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা!
মঙ্গলবার তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত, মগরাহাটের কলসে শাসকদল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন মগরাহাট পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি এবং মগরাহাটে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সাধারণ সম্পাদক খয়রুল হক লস্কর-সহ ৫০০-রও বেশি কর্মী সমর্থক।
এ দিন সকলের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এবং তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে এহেন দলবদল কেন? দলবদলকারী তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতির অভিযোগ, দলে আদি নেতাদের কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
নাম না করে খয়রুল হক লস্করের নিশানায় মগরাহাট পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক নমিতা সাহা। কংগ্রেসে যোগদানকারী তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সাধারণ সম্পাদক খয়রুল হক লস্করের কথায়, একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন এক নেত্রী। প্রথম থেকে ছিলাম। কোনও গুরুত্ব দিত না। উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। কোনও কাজ হয়। একটা সময় কংগ্রেস করতাম। আবার কংগ্রেসে ফিরে এলাম। কোনও প্রভাব পড়বে না, দাবি তৃণমূল বিধায়কের। দলে কোনও প্রভাব পড়বে না।
সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি বাপি হালদারের কথায়, দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। টিকিট পাবে না, জেনে দলত্যাগ করেছে। ওখানকার সব আসনেই আমরা বিপুল ভোটে জিতব।
উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ, গত এক মাসে বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল ছেড়ে বাম- কংগ্রেসে যোগদান করতে কার্যত হিড়িক পড়ে গিয়েছে!এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মগরাহাটে তৃণমূলের এই ভাঙনে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাম কংগ্রেসের জয়ের প্রসঙ্গ তুলে আক্রমণ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, সারা রাজ্য জুড়ে সাগরদিঘি নির্বাচনের পর মানুষ বিশ্বাস করেছে তৃণমূল হারতে পারে। আগে সভা করতে যেতাম। এখন যোগদান সবা করতে যেতে হচ্ছে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই দলবদলের কোনও প্রভাব পড়ে কিনা, সেটাই এখন দেখার।