শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: খাদ্য দফতরে চাকরি (Job) পাইয়ে দেওয়ার ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। কোচবিহারের (Coochbehar) মাথাভাঙা মহকুমা আদালতের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে FIR দায়ের। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে স্থানীয় এক তৃণমূলনেত্রীর (TMC)। চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই আইনজীবী।
কী অভিযোগ?
SSC-র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। তার মধ্যেই, সরকারি চাকরির ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল কোচবিহারে। কাঠগড়ায় মাথাভাঙা মহকুমা আদালতের আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ রায় বাসুনিয়া। রবিবার তাঁর বিরুদ্ধে মাথাভাঙা থানায় FIR দায়ের করেছেন জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির কয়েকজন বাসিন্দা। অভিযোগ, ২০১৩ সালে খাদ্য দফতরের এসআই পদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েকজনের থেকে ১৫ লক্ষ টাকা চান ওই আইনজীবী। প্রাথমিক ভাবে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
আরও পড়ুন, ‘বাংলায় এই সংগঠন নিয়ে ভোট জিততে পারবে না বিজেপির’, তৃণমূলে যোগ দিয়েই সুর চড়ালেন অর্জুন
কিন্তু ৯ বছর পেরিয়ে যেতে চললেও, আজ পর্যন্ত কারোর চাকরি হয়নি। কাউকে টাকাও ফেরত দেননি ওই আইনজীবী। যদিও, টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইনজীবী। মাথাভাঙা মহকুমা আদালতের আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ রায় বাসুনিয়া বলেন, "কে অভিযোগ করেছে জানি না। এফআইআর কপি দেখতে হবে। আমি মক্কেলদের থেকে টাকা নিই। চাকরি দেওয়ার নামে কারোর থেকে টাকা নিইনি। কণিকা যদি প্রমাণ দিতে পারে তাহলে মেনে নেব। নইলে বুঝব আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত।"
নাম জড়িয়েছে তৃণমূলেরও
এই ঘটনায় তৃণমূলের এক স্থানীয় নেত্রীর নামও জড়িয়েছে। ২০১৩ সালে চূড়াভাণ্ডার গ্রামপঞ্চায়েতের তৎকালীন সদস্য ছিলেন তৃণমূল নেত্রী কণিকা চক্রবর্তী। তাঁর মাধ্যমেই চাকরিপ্রার্থীরা আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ রায় বাসুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তৃণমূলনেত্রী নিজেও স্বীকার করেছেন সেকথা। রবিবার তাঁকে সঙ্গে নিয়েই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন চাকরিপ্রার্থীরা।
অভিযোগকারী নীতীশ অধিকারী বলেন, "উকিলকে টাকা দিয়েছিলাম ফুড সাপ্লাইয়ের চাকরির জন্য। পঞ্চায়েত সদস্য কণিকার মাধ্যমে যোগাযোগ হয়। বাসুনিয়া অনেক বড় বড় তৃণমূল নেতার নাম বলেছিল। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম। বারবার বলেও চাকরি হয়নি। পরে বলে প্রাইমারির চাকরি করে দেবে। সেটাও হয়নি।"
এদিকে ময়নাগুড়ির তৃণমূলনেত্রী কণিকা চক্রবর্তী বলেন, "আমি অনেকবার এসেছিলাম, এটার মিউচুয়াল করার জন্য। ওদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। কারণ আমি ছিলাম প্রথম থেকে। আমি ওদের সহযোগিতা করব। রবিবাবুকে বলেছিলাম বিষয়টা মিটিয়ে নিন। কিন্তু উনি অন্য কিছু করেছেন।" অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই এখন দেখার।