কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, পার্থপ্রতিম ঘোষ ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা : ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা (Coromandel express accident )। যার জেরে, এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৭৫ জনের। আহত হয়েছেন ১ হাজারের বেশি মানুষ। প্রশ্ন উঠছে, এত মানুষের মৃত্যুর দায় কার? করমণ্ডল এক্সপ্রেসে কি ছিল না অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস বা 'কবচ'? যে, অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস বা ‘কবচ’-এর ফলাও করে চালু করা হয়েছিল। ধুমধাম করে প্রচার করা হয়েছিল।
তারপরও, এত বড় দুর্ঘটনার দায় তো কাউকে নিতে হবে। যে করদাতাদের টাকায় রেলের রক্ষণাবেক্ষণ হয়, তারাই তো টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠেন। এই আবহে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর! বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার পর,
মোদি সরকারকে নিশানা করছে তৃণমূল-সহ বিজেপি বিরোধী দলগুলি! পাল্টা প্রাক্তন তিন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার ও লালুপ্রসাদ যাদবের আমলে কতগুলি ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছিল? কতজনের মৃত্যু হয়েছিল? তার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য (Amit Malviya)। তিনি ট্যুইটে লিখেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে ট্রেনের সংঘর্ষের ৫৪টি ঘটনা ঘটেছে। লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৮৩৯ বার।
যার জেরে, প্রাণ গেছে ১ হাজার ৪৫১ জনের।
এই ট্যুইটের পাল্টা জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ' আমি বলতে না চাইলেও, বিজেপি আমাকে বলতে বাধ্য করেছে। বিজেপি বা কেন্দ্র রটিয়েছে। হঠাৎ আমার কাছে একটা ম্যাসেজ এল। তাতে তাঁরা একটা লিস্ট দিয়েছে আমার সময় কত মারা গেছে, নীতীশের সময়ে কতজন মারা গেছে, লালুর সময় কত মারা গেছে। যে তথ্য ওরা দিয়েছে ওটা ভুল ইনফরমেশন। আমি জিজ্ঞাসা করি যদি গোধরায় কতজন মারা গিয়েছিল।'
জবাবি ট্যুইটে মালব্য লেখেন, ' রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান হয়েছে মৃতদেহের উপর... সিঙ্গুর থেকে ২০২১ সালের নির্বাচনের পরের হিংসা পর্যন্ত, তিনি যা করেছেন তা হল - মৃত্যু এবং ধ্বংসের নোংরা রাজনীতি'
বালেশ্বরের রেল দুর্ঘটনার নিয়ে চাপানউতোরের আবহেই শনিবার, ১৩ বছর আগের জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। ২০১০-র ২৮ মে ঝাড়গ্রামের কাছে সরডিহায় মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের! সেই সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছিল জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায়। বালেশ্বরের করমণ্ডল বিপর্যয়ের পরে রাজনৈতিক তরজার আবহে ফিরে এল সেই জ্ঞানেশ্বরীই।
এদিন বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে রাহুল গাঁধী ট্যুইট করে বলেন, ' ২৭০ জনের মৃত্যুর পরও কোনও জবাব নেই!
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় দায় মোদি সরকারকে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর উচিত, রেলমন্ত্রীর থেকে ইস্তফা নেওয়া।'