সন্দীপ সরকার, আবীর দত্ত, ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : দেশে ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। টানা তিনদিন ২ হাজারের ওপর রয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই ছবিই উদ্বেগ তৈরি করছে। এই অবস্থায় কোভিড বিধি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কিছুদিন সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর, দেশে ফের দাপট দেখাচ্ছে করোনা। লাগাতার ৩-৪ দিন ধরে মারণ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা ২ হাজারের গণ্ডি পেরোচ্ছে। নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে। কারণ,কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে শীর্ষে রয়েছে দিল্লি। আর দিল্লির সঙ্গে যাতায়াতের সম্পর্কে সংযুক্ত কলকাতা। তাই কলকাতায় করোনাপ ঢেউ আছড়ে পড়া অস্বাভাবিক নয়।
চিন্তা বাড়াচ্ছে শিশুরা
এরই মধ্যে চিন্তা বাড়াচ্ছে শিশুরা। কারণ ১২-র নিচের শিশুরা এখনও ভ্যাকসিন পায়নি। আর তারা স্কুলেও যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আবারও চিন্তা ঘনাচ্ছে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে। ২ বছর গৃহবন্দি থাকার পর ফের স্কুলমুখী হয়েছে পড়ুয়ারা। স্বাভাবিক হয়েছে পড়াশোনার ছন্দ। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের পরামর্শ, শিশুদের ভ্যাকসিন বাড়াতেই হবে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শান্তনু রায় সতর্ক করলেন, ' কোভিড অবশ্যই আছে। দিল্লিতে বাচ্চাদের করোনা হচ্ছে আবার। এটা কিন্তু চিন্তার। বাচ্চাদের মাস্ক পরতেই হবে। এতদিনের অভ্যেস ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
' সব বন্ধ করে দেওয়ার মানে নেই'
অন্যদিকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষ জোর দিলেন আরও বেশি শিশুকে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য। মার্চ মাস থেকে ১২ বছরের বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিনেশন শুরু হয়েছে। এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয়েছে বুস্টার ডোজ। কেন্দ্রীয় সরকারের কো-উইন পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার অবধি আড়াই কোটির বেশি মানুষকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, সংক্রমণ বাড়লেই, সব বন্ধ ' করার পথে না হেঁটে, ভ্যাকসিনেশনে আরও বেশি করে জোর দেওয়া উচিত। অপূর্ব ঘোষ বললেন, ' সব বন্ধ করে দেওয়ার মানে নেই। বাচ্চাদের ভ্যাকসিনেশন বাড়াতে হবে। এক ধাপ এক ধাপ করে এগোচ্ছি আমরা। সেটা মনে হয় বড্ড স্লো। ভ্যাকসিনেশন বাড়াতে হবে। যে ভ্যাকসিন ১২ বছরের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করেনি, ৯-এর ক্ষেত্রে করবে কেন! '
চিকিৎসকদের মতে, প্রত্যেকবারই করোনা থাবা বসিয়েছে, অসতর্কতার ফাঁক গলে। এখনও বহু মানুষের মধ্যে ঠিক সেরকমই ঢিলেঢালা মনোভাব দেখা যাচ্ছে। এখনই সতর্ক না হলে, বিপদ আরও বাড়তে পারে।