কলকাতা: ওমিক্রন-উদ্বেগের মাঝেই করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্কবার্তা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের। স্বাস্থ্য ভবনের অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষণে উঠে এল তথ্য। সূত্রের খবর, এক সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। কলকাতায় গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিতও দেওযা হয়েছে। তৃতীয় ঢেউয়ে প্রতিদিন ৩০-৩৫ হাজার সংক্রমণের পূর্বাভাস স্বাস্থ্য দফতরের। মার্চ-এপ্রিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা।


উল্লেখ্য, উদ্বেগ বাড়িয়ে ৬ মাস পরে ফের রাজ্যে করোনার দৈনিক সংক্রমণ হাজার পার করে গিয়েছে। বুধবারের স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একদিনে ১২জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা আক্রান্তের। দেশের বিভিন্ন রাজ্যেও হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তর সংখ্যা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সতর্কবার্তা। এ ব্যাপারে ধরনের সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। তাঁরা কোভিড-বিধি কঠোরভাবে পালনের ওপর জোর দিয়েছেন। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি নিয়মিত হাত স্যানিটাইজ করা বা সাবান জলে হাত ধোওয়ার বিধি পালনের কথা বারংবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তাঁরা বলেছেন, এ ক্ষেত্রে কোনও গা-ছাড়া মনোভাব বিপদ ডেকে আনতে পারে।


রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তৃতীয় ঢেউয়ের সতর্কবার্তা প্রসঙ্গে চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেছেন, এটা যে বাস্তব হতে চলেছে, তা বেশ কিছুদিন ধরেই অনুমান করা হচ্ছিল। গত বছরের মার্চ মাসেও যখন দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছিল, তখনও তা কার্যত অস্বীকারের মনোভাব ছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত আছড়ে পড়েছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। তা তছনছ করে দিয়ে চলে গিয়েছিল। তাই তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে সমস্ত ধরনের জন সমাবেশ, জমায়েত বন্ধ করা উচিত। এক্ষেত্রে সরকারের চেয়ে নাগরিকদের দায়িত্ব বেশি। আগামীকালই ইংরেজি বছরের শেষদিন। ওই দিন অনেকেই হুল্লোড়-উৎসবে মাতবেন। কিন্তু তা এড়িয়ে চলা উচিত। আর তা না করা হলে এর খেসারত আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যে দেশগুলিতে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে, সেই দেশগুলিতে সংক্রমণ ধীরে ধীরে নয়, এক লাফে বেড়েছে।  তাই জন সমাগম অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।







চিকিৎসক কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেছেন, ওমিক্রন কিন্তু অতি সংক্রামক। খেলা-মেলার মতো জন সমাগমে রাশ টানা না যায়,          নজরদারি যদি জোরদার না হয়, তাহলে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার জন আক্রান্ত হতেই পারে। এতে  স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চাপ পড়বে, যা সামলানো কঠিন হবে।


চিকিৎসক জয়দেব রায় বলেছেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা না বাড়ল, গা-ছাড়া মনোভাব দেখালে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে। ওমিক্রনের সংক্রমণের প্রভাব মৃদু। আইসোলেশন না বলে গোষ্ঠী সংক্রমণ হতে পারে।ইতিমধ্যেই বেশ কিছু কেস পাওয়া গিয়েছে, যাদের বিদেশে যাওয়ার কোনও রেকর্ড  নেই।