হিন্দোল দে, সোনারপুর: আবাসের পর এবার সড়কেও দুর্নীতি? সোনারপুরে (Sonarpur) তৃণমূল পরিচালিত একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। দায় কার? এনিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই দোষারোপের পালা।
আবাসের পর এবার সড়কেও দুর্নীতি? কোথাও রাস্তা তৈরির কাজ বিন্দুমাত্র এগোয়নি। কোথাও বা কাজ হয়েছে ৪ ভাগের ১ ভাগ। আবাস দুর্নীতির পর, এবার সড়ক নির্মাণেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের তৃণমূল পরিচালিত প্রতাপনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। এনিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন এক গ্রামবাসী। সোনারপুরের আড্ডিরাবাদ ICDS স্কুল থেকে ৫ নম্বর ক্লাব, এই রাস্তার জন্য় বরাদ্দ হয়েছে ৩৩ লক্ষ ৩০ হাজার ৮১১ টাকা। দেখানো হচ্ছে রাস্তা তৈরির কাজ শেষ।
অথচ রাস্তার এই হাল, এবড়ো খেবড়ো, কঙ্কালসার। আরেকটি রাস্তা আড্ডিরাবাদ হালদার পাড়া থেকে বেল্ট কারখানা পর্যন্ত। এখানে ইটের রাস্তা তৈরির জন্য় বরাদ্দ হয়েছে ৭ লক্ষ ৩৫ হাজার ১২২ টাকা। এখানেও দেখানো হচ্ছে রাস্তা তৈরির কাজ শেষ। অথচ এতটুকুও কাজ হয়নি। এক বাসিন্দার অভিযোগ, “টাকা অনুমোদন হয়ে গেল। বিডিও এসডিওকে জানিয়েও লাভ হয়নি। দিলীপ ঢালি, পূর্ত কর্মাধ্য, সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতি, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি, প্রতাপনগর পুরোটা পরিচালনা করেছে। কোনও কাজ হয়নি।’’ এনিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রামবাসীরা। মামলাকারীর আইনজীবী সায়ন বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, “প্রতাপনগরের একাধিক রাস্তার জন্য় টাকা অনুমোদিত। রাস্তা হয়নি। তাই জনস্বার্থ মামলা। আদালতের নির্দেশ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হলফনামা জমা দিয়েছেন।’’
আর এই ঘটনায় প্রকট হয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ঘটনায় সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্য়ক্ষ, প্রতাপনগরের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির ওপর দায় ঠেলেছেন, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান। তৃণমূল নেত্রী তাপসী মণ্ডল বলেন, “আমি কিছু জানি না। সই করে দিয়েছি। পরিচালনা করেছে। আমি তো পড়াশোনা জানি না। সঞ্জয় পরিচালন সমিতির সদস্য়। আমাকে দিয়ে সই করে নিয়েছে।’’ সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্য়ক্ষ দিলীপ ঢালি বলেন, “মিথ্যা কথা বলছেন। টাকা এসেছে ঠিকই। ওই টাকায় যা কাজ সম্ভব, তাই হয়েছে।’’
এর আগে, আবাসে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল এই দিলীপ ঢালির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের এই পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের মা ও ছেলের নাম ছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি প্রাপকদের তালিকায়। আর এবার সড়কেও এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেই উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মামলাটি বিচারাধীন হওয়ায় এনিয়ে কোনও মন্তব্য় করা হবে না। তবে, নির্দিষ্ট কোনও রাস্তা নিয়ে অভিযোগ হলে, তা খতিয়ে দেখা হবে।
আরও পড়ুন: DA Agitation: বকেয়া ডিএ না মেটালে এবার পঞ্চায়েত পেনডাউনের হুঁশিয়ারি সরকারি কর্মীদের