কলকাতা : বিজেপি যুব মোর্চার (BJP Yuva Morcha) এক নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে উত্তাল কাশীপুর (Cossipore)। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ২৬ বছরের ওই যুবক, অর্জুন চৌরাসিয়াকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতোর। মৃত্যু-ঘিরে উঠছে রাজনৈতিক-যোগের অভিযোগও। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বললেন, "মৃত্যু হলেই তার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ আসছে কী করে ? মৃত্যু হয়েছে, তার তদন্ত করতে দিন । যেদিন অমিত শাহ আসছেন সেদিনই এরকম ঘটনা ঘটল। এটা পরিকল্পিত চিত্রনাট্য কিনা তারও তদন্ত হওয়া দরকার।"
কাশীপুরে বিজেপি যুব মোর্চার এক নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে তুলকালাম। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ২৬ বছরের ওই যুবক, অর্জুন চৌরাসিয়াকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাশীপুর রেল কোয়ার্টারের পরিত্যক্ত একটি ঘরে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ মেলে। ঘটনাস্থলে চলে আসেন বিজেপি নেতা, কর্মী, সমর্থকরা। পুলিশকে দেহ বের করতে বাধা দেওয়া হয়। দফায় দফায় বিক্ষোভ হয় পুলিশকে ঘিরে। এরমধ্যেই ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অতীন ঘোষ। তৃণমূল ও বিজেপি, দু’দলের কর্মীদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় স্লোগান যুদ্ধ।
পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে। তারা দেহ উদ্ধার করতে গেলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। অবশেষে বিজেপি কর্মীদের টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে পুলিশ মৃতদেহ বের করে। প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনায় মৃতের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
এদিকে বঙ্গ সফরের দ্বিতীয় দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কলকাতায় আসার দিনই চিত্পুরে মিলল বিজেপি যুব মোর্চা নেতার ঝুলন্ত দেহ। বিজেপি সূত্রে খবর, দলের যুব মোর্চা নেতার রহস্যমৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। তিনি ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, তাঁকে কলকাতায় স্বাগত জানানোর কর্মসূচি যেন বাতিল করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে যা বললেন, "এই গোটা ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোথাও, কোনও সম্পর্ক নেই। যাঁর মৃত্যু হয়েছে, তাঁকে বিজেপির এক বিদ্রোহী বিক্ষুব্ধ নেতার সঙ্গে দেখা যেত। শান্ত এলাকা। নির্বাচনপর্বও শেষ হয়ে গেছে। ওই এলাকায় মৃত্যু হল। এবার এটা আত্মহত্যা নাকি হত্যা - এ তদন্ত না হলে কে বলবে। যে কোনও ব্যক্তির নানা সমীকরণ থাকে, ফলে তিনি যে দলেরই হোন ..মৃত্যু হলেই সঙ্গে সঙ্গে সেটা রাজনৈতিক মৃত্যু...এই কথাগুলো আসছে কোথা থেকে।"
তিনি আরও বলেন, "ঘটনাস্থলে বহু বহিরাগত ঢুকেছে। সেক্ষেত্রে তো তথ্য-প্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনা রয়েছে। পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টাও হতে পারে। বাংলায় কোনও ইস্যু নেই। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর কোনও কর্মীকে বলি দিয়ে ইস্যু তৈরি হচ্ছে কিনা সেই প্রশ্নও উঠবে। আত্মহত্যা হলে কেন আত্মহত্যা তার তদন্ত করতে হবে। হত্যা হলে কারা হত্যা করল সেই তদন্ত করতে হবে। যেদিন অমিত শাহ আসছেন সেদিনই এরকম ঘটনা ঘটল। এটা পরিকল্পিত চিত্রনাট্য কিনা তারও তদন্ত হওয়া দরকার। কোনও তথ্য-প্রমাণ ছাড়া রাজনৈতিক হত্যার ইস্যু তৈরি হল ?"