আসানসোল: আদালতে জামিনের আবেদন করলেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। এদিন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে জামিনের আবেদন জানালেন তাঁর আইনজীবী। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের আবেদন অনুব্রতর। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর এজলাসে জামিনের আবেদন দাখিল করা হয়। আদালতে পেশের আগে এদিন মেডিক্যাল টেস্টের জন্য নিজাম প্যালেস থেকে আলিপুরের কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রতকে। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি দাবি করেন, ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে যাই দাবি করুক, তাঁর কোনও বেনামি সম্পত্তি নেই। পাশাপাশি, তদন্তে সিবিআইকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন বলেও দাবি করেন অনুব্রত।
অনুব্রত মণ্ডলের যাত্রাপথে কড়া নিরাপত্তা: আসানসোলের সিবিআই আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় অনুব্রত মণ্ডলের যাত্রাপথে ছিল কড়া নিরাপত্তা। নিজাম প্যালেস থেকে অনুব্রতকে নিয়ে রওনা দেয় সিবিআইয়ের ৮টি গাড়ির কনভয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন প্রায় ৫০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। আসানসোলের সিবিআই আদালতেও নিরাপত্তার কড়াকড়ি। দায়িত্বে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি ও ডিসি পদমর্যাদার একাধিক অফিসার।কোর্ট চত্বরে লোহার ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। সিবিআই আদালতে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ।
নজরে টাকার উৎস: ইতিমধ্যেই অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর আত্মীয়দের ১৬ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ফ্রিজ করেছে CBI। অনুব্রত মণ্ডলের থেকে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, ১৭ কোটির এই FD’র টাকার উৎস কী? গরু পাচারের টাকা দিয়েই কি ফিক্সড ডিপোজিট করা হয়েছে? অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর আত্মীয়দের আর কোথায় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে? এদিকে, অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর আত্মীয়দের প্রায় ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ফ্রিজ করার পর, এবার সিবিআইয়ের নজরে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।
সূত্রের দাবি, অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ ১০-১২ জনের নাম উল্লেখ করে কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তিদের নামে কোন অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে? কোনও FD বা বিনিয়োগ করা হয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সিবিআইয়ের অনুমান, বেনামি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও গরুপাচারের কোটি কোটি টাকা থাকতে পারে। এদিকে, শুধু বীরভূম নয় CBI সূত্রে দাবি, বীরভূমে বসেই মুর্শিদাবাদের কিছু জায়গায় গরুপাচার কন্ট্রোল করা হত। অনুব্রতর হয়ে পাচারের কাজ দেখতেন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। অন্যদিকে, ব্যবসায়ী এনামুল হকের হয়ে পাচার সামলাত ইলামবাজারের গরুর হাটের দালাল শেখ আব্দুল লতিফ। সিবিআই সূত্রে দাবি, গরুপাচারের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের সম্পত্তি কেনার যোগ রয়েছে। দু’-দু’বার হাতবদল করে, সায়গল হোসেনের আত্মীয়ের নামে সম্পত্তি কেনা হয়। এই বেচাকেনায় মূল ভূমিকা ছিল ইলামবাজারের গরুর হাটের দালাল আব্দুল লতিফের।