প্রকাশ সিনহা, দিল্লি: তিহার জেলে দ্বিতীয়বার দেখা হল বাবা-মেয়ের। দেখা হল গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত ও সুকন্যা মণ্ডলের। শনিবার দেখা হয় দুজনের, আধ ঘণ্টা মতো দেখা হয়। সূত্রের খবর, মেয়ের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনুব্রত। 


'তোর দিল্লি আশা উচিত হয়নি', মেয়েকে বলেন অনুব্রত। তা শুনে বাবাকে মেয়ে সুকন্যা বলেন, 'বারবার নোটিস পাঠাচ্ছিল কি করব?'। কথা বলার সময়েই মেয়েকে আশ্বাস দেন অনুব্রত। সব ঠিক হয়ে যাবে, চিন্তা না করতে বলেন মেয়েকে। 'অ্যারেস্ট হওয়ার আগে তোমার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম,কাস্টডিতেও কথা বলতে চেয়েছিলাম,কিন্তু দেওয়া হয়নি', অনুব্রতকে বললেন সুকন্যা।


দীর্ঘদিন ধরেই চলছে গরু পাচার মামলার তদন্ত। সেই মামলার তদন্তের সূত্রে একাধিক গ্রেফতার হয়েছে। বীরভূমের দোর্দন্ডপ্রতাপ জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর মেয়ে সুকন্যা মন্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অনুব্রত মন্ডলের হিসাবরক্ষককে। এছাড়াও বিএসএফ-এর এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক গ্রেফতার হয়েছিলেন।


সুকন্যার বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ
এর আগেই গরু পাচার মামলায় কোটি কোটি টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে, সুকন্যা মণ্ডলের কী ভূমিকা ছিল, তা চার্জশিটের ১৮৬ ও ১৮৭ নম্বর পাতায় বিস্তারিত তুলে ধরে  ED. কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে সেখানে দাবি করা হয়, অনুব্রতর ব্যবসায় সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন তাঁর মেয়ে। ভোলে ব্যোম রাইস মিলে, মায়ের সঙ্গে অংশীদার ছিলেন সুকন্যাও।  নীড় ডেভলপার্স প্রাইভেট লিমিটেড এবং ANM অ্যাগ্রোকেমের ডিরেক্টর পদেও ছিলেন তিনি। এমনকী অনুব্রত মণ্ডলের পরিচারকের ITR দেখে মনে করা হচ্ছে, আসলে সেটি সুকন্যার ITR. কারণ নথি হিসেবে সেখানে অনুব্রত কন্যার ইমেল আইডি দেওয়া ছিল। বাবার থেকে মেয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনেক বেশি, তাই তিনি কোনওভাবেই বলতে পারেন না যে, বাবার নির্দেশেই তিনি যাবতীয় কাজ করেছেন। তিনিও অপরাধের টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত। এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। 


তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতিকে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করা হলেও এখনও দলীয় পদ থেকে তাঁকে সরানো হয়নি। তবে বীরভূমের দলের কাজ দেখার জন্য বিশেষ নজর দিয়েছে তৃণমূল। বীরভূমে প্রচারে গিয়ে অনুব্রত মন্ডল, সুকন্যা মন্ডলের নাম তুলে অমিত শাহকে নিশানা করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, 'সুকন্যা মণ্ডলের সম্পত্তি ১৫০ গুণ বেড়েছে বলে গ্রেফতার করেছে। অমিত শাহর ছেলের ৮০ হাজার গুণ সম্পত্তি বেড়েছে। কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হবে না?' এর পর বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, 'সীমান্তে বিএসএফ থাকা সত্ত্বেও কী করে গরুপাচার হয়? বিএসএফ গরুপাচারের টাকা অমিত শাহ নাকি তাঁর ছেলেকে পাঠিয়েছে?'   


আরও পড়ুন: গরমের মরসুমে রাতের ঘুমে সমস্যা? সমাধানে মেনে চলতে পারেন সহজ কয়েকটি নিয়ম