কলকাতা : পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) গ্রেফতারির পর ক্রমাগত রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে চাপ বাড়িয়ে চলেছে বিরোধীরা। চাপের মুখে গ্রেফতারির ছয় দিন পর পরিষদীয়, শিল্প-বাণিজ্য, তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পার্থকে। যদিও আইনজীবী তথা সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya) মনে করেন, 'আসল অপরাধী মুখ্যমন্ত্রী।' 'তাঁকে ঝেড়ে ফেলুন', বলে দাবি তুলেছেন তিনি।


টালিগঞ্জের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটেও টাকার পাহাড়ের হদিশ মেলে। ইডি সূত্রে খবর, ১৮ ঘণ্টার তল্লাশিতে ক্লাবটাউন হাইটসের ১৪০০ স্কোয়ার ফিটের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। এছাড়াও, মিলেছে ৬ কেজি সোনা। যার মূল্য ৪ কোটিরও বেশি। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর সোনার বাট, মুঠো মুঠো রুপোর কয়েন ও সম্পত্তির একাধিক দলিল। অর্পিতার ফ্ল্যাটে শোওয়ার ঘর ও শৌচাগার থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা ও সোনা উদ্ধার হয়েছে বলে ইডি সূত্রে দাবি। মোট ৭টি ট্রাঙ্কে নগদ ও একটি ট্রাঙ্কে সোনা বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয় স্ট্র্যান্ড রোডে স্টেট ব্যাঙ্কের সদর দফতরে। একসপ্তাহের মধ্যে টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ায় অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট মিলিয়ে উদ্ধার হল ৫০ কোটি টাকা। বেলঘরিয়ায় অর্পিতার আরেকটি ফ্ল্যাট সিল করে দিয়েছে ইডি। এদিকে টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ায় উদ্ধার হওয়া টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, বলে জেরায় বিস্ফোরক দাবি করেছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এমনই দাবি ইডি সূত্রে।


আরও পড়ুন ; 'নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করছি, ততদিন আমার হাতে থাকবে পার্থদার দফতর’ জানালেন মমতা


সরানোর দাবি ওঠে দলেই-


এই পরিস্থিতিতে কুণাল ঘোষ ট্যুইটে লেখেন, অবিলম্বে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব ও দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। তাঁকে বহিষ্কার করা উচিত। যদি আমার এই বক্তব্য ভুল হয়, তাহলে দলের পূর্ণ অধিকার রয়েছে, আমাকে দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার। আমি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সৈনিক হিসেবে থাকব। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে কুণাল ঘোষকে সমর্থন জানিয়েছেন তৃণমূলের দুই মুখপাত্র বিশ্বজিৎ দেব ও দেবাংশু ভট্টাচার্য।


ইঙ্গিতপূর্ণ ট্যুইট করেন দেবাংশু ভট্টাচার্যও। তৃণমূল মুখপাত্র লিখেছেন, ঠাকুমা বলতেন, ফোড়া যখন পুঁজে ভরে এসেছে, অনতিবিলম্বে তাকে ফাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। শরীর ভালো থাকে, শান্তিতে ঘুমানো যায়। একটি ফোড়ার জন্য গোটা শরীরকে কষ্ট দেওয়া বৃথা। ইঙ্গিতপূর্ণ ট্যুইট দেবাংশু ভট্টাচার্যর। 


এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হল বেহালা পশ্চিমের বিধায়ককে। যদিও এনিয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় আজ তৃণমূল নেত্রীকে আক্রমণ করেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, পার্থ তো এই টাকা নিজের জন্য করেনি। এটা তৃণমূল দলের টাকা। তৃণমূল দলের সমস্ত অপকর্ম, পার্থ তাদের মহাসচিব ছিলেন। শৃঙ্খলারক্ষার কমিটির চেয়ারম্যান। মন্ত্রিসভার দুই নম্বর। যতই চেষ্টা করুক, এসব করে ঝেড়ে ফেলা যাবে না। আসল অপরাধী মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ঝেড়ে ফেলুন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সেভাবে ব্যবস্থা নিক, তবেই একমাত্র রেহাই। অন্য কোনও রাস্তা নেই


তিনি আরও বলেন, আমাদের একটাই বক্তব্য, মেধাভিত্তিক নিয়োগ হোক। যারা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছে, তাদের সবাইকে সরে যেতে হবে।