আশাবুল হোসেন, সুনীত হালদার করুণাময় সিংহ, কলকাতা : বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করবে না তৃণমূল। সাফ জানিয়ে দিলেন তৃণমূলনেত্রী। বললেন, বাংলায় একা চলব। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ও বিজেপির গোপন বোঝাপড়া, এই ভাষাতেই কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস। সিপিএম আবার বলছে, এবার ধীরে এগোবে ED-CBI। I.N.D.I.A জোট এমন একটি নৌকা, যার কোনও নাবিক নেই, কটাক্ষের সুর বিজেপি রাজ্য সভাপতির গলায়।


বাংলায় 'INDIA' জোট 'ভাঙলেন' মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় । জানিয়ে দিলেন কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করবে না তৃণমূল। বাংলার ৪২টি আসনে তৃণমূল একাই লড়বে। কংগ্রেসের ওপর ক্ষোভ ঝরে পড়ল তৃণমূল নেত্রীর। তিনি বলেন, "আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই বাংলার ব্যাপারে। কিন্তু এখন কোনও চর্চা নেই, মিথ্য়া কথা, একেবারেই ভুল। মিথ্য়াটা আমি বলব না, সম্পূর্ণ ভুল।" 


তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য দীপা দাশমুন্সি বলেন, "আমরা জানি তাঁর (মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়) সঙ্গে বিজেপির গোপন সমঝোতা আছে। এতদিন তিনি INDIA-তে ছিলেন, হঠাৎ করে তাঁর (মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়) মত বদলে দিলেন, এর থেকেই প্রমাণিত বিজেপির সঙ্গে তাঁর (মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়) সমঝোতা রয়েছে।"


সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "এখন বোঝা যাচ্ছে বোধহয় কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে, ইডি-সিবিআইকে অভিষেককে ছাড় দেওয়া হবে, সেজন্য় ইডি-সিবিআই এখন শাহজাহানের কাছে যাচ্ছে, অভিষেকের কাছে যাচ্ছে না। অভিষেক ব্য়ানার্জি নিয়ে এত তড়পাচ্ছিল বিজেপির যে সমস্ত নেতারা রাজ্য়ের, তাঁরাও কেউ কোনও কথা বলছেন না।"


গতবছর, ১৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে বিরোধী জোটের বৈঠকে সনিয়া গান্ধীর পিছু পিছু বৈঠক-কক্ষে পৌঁছতে দেখা যায় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে।
বৈঠকে রাহুল গান্ধীর পাশে দেখা যায় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে। সূত্রের দাবি, সেই বৈঠকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় প্রস্তাব দেন লোকসভা ভোটে ৫৪৩টা আসনের মধ্য়ে কংগ্রেস ৩০০ আসনে লড়ুক। ২৪৫টা আসন বাকি শরিকদের ছেড়ে দিক। আমরা পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে ২টো আসন দিতে চাই। কংগ্রেস মেঘালয়ে আমাদের একটা আসন ছেড়ে দিক।

পরদিন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, আমি মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের দয়ায় লড়তে চাই না। এপ্রসঙ্গে তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্য,
"ভোটটা কারও নিজের একার নয়, আঞ্চলিক দলগুলো আমরা এক থাকব। আমরা তো বলেছি, ৩০০ সিটে একা লড়াই করুক। আঞ্চলিক দল বাদবাকি সিটে লড়াই করবে, সেখানে ইন্টারফেয়ার করবে না। সেখানে যদি ইন্টারফেয়ার করে, তাহলে সেখানে আমরা বুঝব অন্যরকম।"

এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "I.N.D.I.A জোট এমন একটি নৌকা, যার কোনও নাবিক নেই। না নেতা আছে, না নীতি আছে। তো স্বাভাবিকভাবে সেই নৌকা কোথাও না কোথাও গিয়ে ধাক্কা মারে, যেখানে পৌঁছনোর সেখানে পৌঁছয় না।"

রাজনীতিতে কে কখন কার সঙ্গে...কার সঙ্গে প্রকাশ্য়ে, কার সঙ্গে গোপনে...এ বোঝা দায়।