Md. Salim: 'কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে', কংগ্রেসকে নিয়ে সেলিমের মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া অধীরের; শোরগোল রাজ্য রাজনীতিতে

CPM : কলকাতায় এসে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, কেরলে যেমন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে তারা, তেমনই এরাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস-বিজেপি, দুই দলের বিরুদ্ধেই লড়বে সিপিএম।

Continues below advertisement

রানিনগর ও কলকাতা : কোন পথে বইছে I.N.D.I.A জোটের ভবিষ্যৎ ? লোকসভা ভোটে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে এমনিতেই কোনও সমঝোতায় যেতে যে রাজ্য সিপিএম বা কংগ্রেস নেতৃত্ব ইচ্ছুক নয়, তা তাঁরা সরাসরি একাধিক বার বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু, সেই তৃণমূলকে নিয়েই এবার কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যেও শুরু হয়ে গেল তাল ঠোকাঠুকি। রানিনগরের সভা থেকে কংগ্রেসের উদ্দেশে মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। পাল্টা জবাব দিয়েছেন প্রদেশে কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। কংগ্রেস-সিপিএমের এই টানাপোড়েন নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। সিপিএম ও কংগ্রেসকে একযোগে বিঁধে সুর চড়িয়েছে তৃণমূলও।

Continues below advertisement

রানিনগরের সভা থেকে সেলিম বলেন, "ভোরের অন্ধকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পেশাল প্লেন নিয়ে রাহুল গাঁধীর ঘরে চলে গেলেন। আমরা যখন বলছি, চোর ধরো জেল ভরো, চোর তখন কংগ্রেসের পায়ে পড়ে বলছেন, দাদা আমাকে বাঁচান। কিন্তু, কংগ্রেস দলকেও বুঝতে হবে, ২০১১-তে যদি কংগ্রেস দল তৃণমূলকে সমর্থন না করত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিম্মত ছিল না রাইটার্স বিল্ডিংয়ে পৌঁছানোর। কিন্তু, যে কংগ্রেসের মাথায় উঠে তিনি সরকারের মন্ত্রী হলেন, মন্ত্রী হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে দাঁড়িয়ে সেই কংগ্রেসকে লাথি মারার চেষ্টা করলেন। কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে শেখে। বাংলার কংগ্রেস এটা বুঝেছে।"

সেলিমের মন্তব্যের পাল্টা অধীর চৌধুরী বলেছেন, "আমাদের না বলে যাঁরা বলছেন তাঁদের জ্ঞান অর্জন করতে বলুন তাহলেই হবে। আমরা যা বোঝার বুঝেছি। পা ধরছে মানে কী করা যাবে ? রাহুল গাঁধীর কাছে কেউ যদি পা ধরতে যান, রাহুল গাঁধী বলবেন আমার বাড়িতে ঢুকো না ? আমরা সেটা করতে পারি না।"

এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "এটা ওদের পারিবারিক ব্যাপার, মান-অভিমানের ব্যাপার। পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী সমর্থক বা কর্মী যাঁরা ছিলেন, যাঁরাই অবশিষ্ট আছেন, তাঁরা যে সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে ওখানে দিল্লিতে চা পানটা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না, সেটা প্রতি পদক্ষেপেই এখানকার নেতারা বুঝতে পারছেন। তাই মুখ বাঁচানোর জন্য, এখানে কর্মীদের বিভ্রান্ত করার জন্য এই ধরনের বক্তব্য রাখছেন। সিপিএম এই মুহূর্তে রাহুল গাঁধীর নির্দেশেই, রাহুল গাঁধীর পথে চলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরোক্ষভাবে সমর্থন করে চলেছে। কে পা ধরছে বা অন্য কী ধরছে সেটা আমাদের জানা নেই। তবে, যদি রাহুল গাঁধীর পা ধরে থাকেন, তবে রাহুলবাবুর নির্দেশেই অধীরবাবুরা পরবর্তীকালে ওদের হাত ধরে নেবেন। হাত তো ধরাই আছে, তবে একটু গাছের আড়ালে। পর্দার পেছনে। সরাসরি সামনে আসবেন।"

এনিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, "২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস একক শক্তিতেই বামফ্রন্ট সরকারকে হারিয়েছে। ৩৪ বছরের জগদ্দল পাথরকে সরিয়েছে। এটা মহম্মদ সেলিমের মনে রাখা উচিত। তার পর থেকে যে সিপিএমের হাতে কংগ্রেসের ৫৮ হাজার কর্মী খুন হয়েছিলেন, সেই কংগ্রেসের কাটা হাত দিয়ে সিপিএমের কাস্তে হাতুড়ি ধরার ফলে ২০১৬ এবং তারপর ২০২১-এর নির্বাচনে বাংলার মানুষ কংগ্রেস এবং সিপিএম দুই দলকেই শূন্য করে দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস একক শক্তিতে বলিয়ান। তাই আগামীদিনে সারা ভারতে যে ইন্ডিয়া জোট তার অন্যতম শরিক হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল লড়বে। বাংলায় বিজেপির দালালি করতে করতে সিপিএম এবং কংগ্রেস শূন্য হয়ে গেছে। "

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola