সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : বরানগর বিধানসভা কেন্দ্রের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী রেয়াত হোসেনের  শপথ-টানাপোড়েনের মধ্যেই রাজ্যপালকে নিশানা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন,  'ওঁর রাজভবনে কেন সবাই যাবে?রাজভবনে যা কীর্তিকলাপ চলছে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছে।' এরপর, গত ২৯ জুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার হুঁশিয়ারি দেন রাজ্যপাল। ২ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের এজলাসে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন রাজ্যপাল।  মুখ্যমন্ত্রীর বনাম রাজ্যপালের সেই মামলার শুনানি হল সোমবার । দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে  রায়দান আপাতত স্থগিতই রাখল আদালত। 


এই মামলার শুনানিতে মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী জানান, রাজ্যপালের সম্মানহানি হয়, এমন কোনও মন্তব্য করা হয়নি। আর যদি সম্মানহানি না হয়ে থাকে তবে অন্তর্বর্তী নির্দেশ জারির প্রয়োজন নেই। যদি মূল অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণ হয় তবে জনগণের সেটা জানা প্রয়োজন। একজন জনপ্রতিনিধির অভিযোগ, তিনি রাজ্যপালের কারণে তাঁর দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। এটাতে কীভাবে সম্মানহানি হয়? প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী। তিনি আরও সওয়াল করেন, 'রাজভবনে যে ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ, সেটা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। সেটা তো রাজ্যপাল কোথাও চ্যালেঞ্জ করেননি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন মহিলারা রাজভবনে যেতে ভয় পাচ্ছেন'। বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকারের আইনজীবী সওয়াল করেন, রাজ্যপালের এই মামলা গ্রহণযোগ্য নয়। তার কারণ সাংবিধানিক রক্ষায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনও আদালত কোনও ধরনের পদক্ষেপ করতে পারবে না। বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের আইনজীবী বলেন, রাজভবনের এই মহিলার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, সেটাই সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে পেরেছেন এবং সেই কারণেই তিনি একজন মহিলা হিসাবে তার আশঙ্কাপ্রকাশ করছেন।

রাজ্যপালের আইনজীবীর পাল্টা যুক্তি, 'বিভিন্ন বিল নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলছে। তাই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিদ্বেষমূলক। সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় জানাতে পারতেন যে তিনি রাজভবনে যেতে ভয় পাচ্ছেন। সেটা তিনি করেননি'। তিনি আরও বলেন, 'সবাই বলছেন, তাঁরা বিভিন্ন ব্যক্তি বা মহিলাদের থেকে অভিযোগ পেয়েছেন, জানতে পেরেছেন, রাজভবনে কী ঘটনা ঘটেছিল, 'তাই তাঁরা রাজভবনে যেতে ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু সেই ব্যক্তি বা মহিলা কারা? কেউ নেই। কারও এই ধরনের অভিযোগ সম্পর্কে ব্যক্তিগত জ্ঞান নেই'। 


দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর শুনানি মুলতুবি রেখেছেন বিচারপতি। আদালত এই বিষয়ে কোনও পর্যবেক্ষণ রাখেনি। এমনকী, কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশও দেননি। এখন দেখার এই মামলার পরবর্তী শুনানি কবে নির্ধারিত হয়।   


আরও পড়ুন :


উড়ে এল বাদুড়ের ঝাঁক, তালা খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ ! কী বেরলো পুরীর রত্নভাণ্ডার থেকে?