পার্থপ্রতিম ঘোষ, গৌতম মণ্ডল, শান্তনু নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর: ফের চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। আর তার আগে আশঙ্কায় সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দারা। ঘূর্ণিঝড় মোকা'র (Cyclone Mocha) কারণে বাড়ছে ভয়। সুন্দরবন এলাকায় আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। আগামীকাল থেকে জেলার ৫টি মহকুমাতে খোলা হবে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম। সেখানে সারাক্ষণই থাকবেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। আগামী একসপ্তাহ সেচ ও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আশ্রয়স্থল হিসেবে ওই এলাকার স্কুলগুলিকেতে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। সেচ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে দুর্বল বাঁধ পরিদর্শন করছেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। শনিবার সাগরের ধবলাট এলাকায় নদীবাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। রবিবার মৌসুনী দ্বীপে গিয়ে বিভিন্ন নদীবাঁধের অবস্থা খতিয়ে দেখেন।
কী বলেছেন মন্ত্রী:
সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, 'ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্চে। সিভিল ডিফেন্স থেকে এনডিআরএফ, কোস্টগার্ড, হঠাৎ জলোচ্ছ্বাসে কোনও গ্রাম প্লাবিত হলে গ্রামবাসীদের নিকটবর্তী ফ্লাড শেল্টারে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।'
অন্যদিকে, গোসাবা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার নদীবাঁধের বেহাল দশা। পূর্ণিমা বা অমাবস্যার কটালেই বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ ভাঙছে, ধস নামছে। এরপর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়লে বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মোকার পূর্বাভাসেই কার্যত ঘুম ছুটেছে সুন্দরবন লাগোয়া গোসাবার বাসিন্দাদের। যদিও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
গোসাবার বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, 'ঝড়ের মোকাবিলায় সব রকম উদ্যোগ নেওয়া হচছে। যেখানে নদীবাঁধের ভগ্নদশা, তা মাটি দিয়ে মেরামতের চেষ্টা চলছে। টেন্ডার করে দ্রুত বাঁধ মেরামতির চেষ্টা চলছে। সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছে।'
উপকূলবর্তী জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড় মোকাবিলায় শুরু হয়েছে মক ড্রিল। দিঘা, মন্দারমণি, কাঁথি-সহ একাধিক জায়গায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মকড্রিল শুরু হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে, তাকে ঘিরে জোরাল হচ্ছে নানা আশঙ্কা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, সোমবার সকালে নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণাবর্ত। শক্তি বাড়িয়ে বুধবারের মধ্যে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তবে সেই ঝড়ের অভিমুখ কোন দিকে হতে পারে, এখনও তার কোনও দিশা মেলেনি। গত ৪ বছরে মে মাসেই ৪টি বড় ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। তার মধ্যে আমফান ও ইয়াস আছড়ে পড়েছিল রাজ্যে। এবারও কি মে মাসেই আরও একটি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে চলেছে?
কালকের সন্ধের মধ্যে জানা যাবে, অভিমুখ কোন দিকে হবে। কলকাতাতেও ঘূর্ণিঝড় মোকাবালির জন্য প্রস্তুত। আজ সকাল থেকে লালবাজারে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফ্রিজে রাখা তরমুজ খাচ্ছেন গরমে? ভুলেও এই ভুল করবেন না!