সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: ভোররাতে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোকা। ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ছিল ২৪০ কিলোমিটার। আজ সকালে স্থলভাগের কাছাকাছি আসার পর মোকা-র গতিবেগ কিছুটা কমে চরম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আছড়ে পড়বে। ল্যান্ডফলের সময় গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার। মোকা-র তাণ্ডবে বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূল সংলগ্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা। 


ঘূর্ণিঝড় মোকা আঘাত হানতে চলেছ বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলে, এখনও পর্যন্ত এটারই পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সেই কারণেই ওই দুই দেশে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের কক্স বাজারের কাছাকাছি ল্যান্ডফল হওয়ার কথা। এখনও পর্যন্ত কক্সবাজার থেকে প্রায় ২ লক্ষ, চট্টগ্রাম থেকে এক লক্ষ লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। ঝড়ের কারণে বাংলাদেশ উপকূলে বিপুল উচ্চতায় উঠতে পারে সমুদ্রের ঢেউ। ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে, যা থেকে ভূমিধসের আশঙ্কাও রয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের বন্দরের কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।


মায়ানমারেও রাখাইন উপকূল এলাকা থেকে সরানো হয়েছে বাসিন্দাদের। মায়ানমার এয়ারওয়েজ ইন্টারন্যাশনাল- রাখাইন পর্যন্ত তাদের সব বিমান সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করেছে। 

বাংলায় কেমন আবহাওয়া?
অন্যদিকে, মোকা-র পরোক্ষ প্রভাবে এ রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় আজ আকাশ মেঘলা থাকবে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর নদিয়া জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আজও মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া নিষেধ। কাল থেকে রাজ্যে আবহাওয়া বদল। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদে। উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই কাল থেকে বৃষ্টি শুরু হবে।

পশ্চিমবঙ্গে কী সতর্কতা:
অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের ঝাপটা এ রাজ্যে সরাসরি পড়বে না বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তবে আমফান, ইয়াসের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আশঙ্কার মেঘ উড়িয়ে দিতে পারছেন না উপকূল অঞ্চলের বাসিন্দারা। সতর্ক প্রশাসনও। উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে টহল দিচ্ছে NDRF। প্রচারে নেমেছে পুলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবায় মাইকে সতর্ক করছে পুলিশ। ঝড়খালিতে বোটে চড়ে চলছে প্রচার। কুলতলিতে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সতর্ক করছেন NDRF কর্মীরা। বকখালি, সাগর, ফ্রেজারগঞ্জ-সহ সমুদ্রতটের সবকটি পর্যটনকেন্দ্রে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যটকদের সমুদ্রে নামা নিষেধ করা হয়েছে। মুড়িগঙ্গা ও কালনাগিনী নদী তীরবর্তী এলাকায় টহল দিচ্ছে কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার পুলিশ ও NDRF। উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জেও সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এলাকায় ঘুরছে NDRF। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে বাজার এলাকা, নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সচেতন করার কাজ চলছে। 


আরও পড়ুন: খুব গরম! এসি ছাড়াই ঠান্ডা থাকবে ঘর, কী করতে হবে?