পূর্ব মেদিনীপুর: উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে কম ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব মেদিনীপুর। ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ড ফলের পরেও দিঘার সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস অব্য়াহত।ওল্ড দিঘা ও নিউ দিঘায় আজও সমুদ্রে কাউকে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। সৈকত-শহরের আশপাশের এলাকা থেকে এখনও বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। বকখালির পাশে লক্ষ্মীপুর গ্রাম। সমুদ্রের ধারে এই গ্রাম। ভেঙেছে গ্রামের বাড়িঘর। সমুদ্রের জল ঢুকেছে চাষের জমিতে। গ্রামের অনেক বাসিন্দাই আশ্রয় নিয়েছেন ফ্লাড সেন্টারে।


আয়লা থেকে ফণী, আমফান থেকে ইয়াস, অতীতে এই সমস্ত ঘূর্ণিঝড়ই আছড়ে পড়েছে মে মাস নাগাদ।রবিবার রাত থেকে ২ চোখের পাতা এক করতে পারেনি কাকদ্বীপের নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের নান্দাভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দারা। এখানে প্রায় ৪০০ মিটার নদীবাঁধ ধসে গেছে। প্লাবনের আশঙ্কায় দিশেহারা প্রায় আড়াইশোটি পরিবার। একদিকে হাতানিয়ে দোয়ানিয়া নদী, অন্য়দিকে মুড়িগঙ্গা নদী। গতকাল বিকেল থেকে এই নদীবাঁধে ধস। ৪০০ মিটার নদীবাঁধ তলিয়ে গেছে মুড়িগঙ্গায়। গাছ শিকড় শুধু ভেসে গেছে। ২৫০টি গ্রাম। আতঙ্কের প্রহর গুনছেন গ্রামবাসীরা। ইয়াসের সময় নদীবাঁধ দেওয়া হয়। তা দুর্বল হওয়ার পর অনেক বার প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। ৪০০ মিটার নদীবাঁধ তলিয়ে গেছে। 


রেমাল-তাণ্ডবে গোসাবার রাঙাবেলিয়ায় বেশ কিছু জায়গায় ধস নামে।ভেঙে গেছে গোমর নদীর বাঁধের অংশ। দুর্যোগের মধ্য়েই প্লাস্টিক ও ত্রিপলের সাহায্যে বাঁধ মেরামতির চেষ্টা করছে প্রশাসন। মেরামতিতে হাত লাগিয়েছে গ্রামবাসীরাও। গোসাবা বাসিন্দা তন্ময় মণ্ডল বলেন, নদীর বাঁধ বিভিন্ন জায়গায় খারাপ রয়েছে। আমরা গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্য়োগে সারানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু, গ্রামবাসীরা যথেষ্ট আতঙ্কের মধ্য়ে রয়েছে। ব্লক পিচিং হলে গ্রামবাসীরা সুরক্ষিত থাকতে পারবে। গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতি সহ সভাপতি কৈলাস বিশ্বাস বলেন,  কিছু কিছু জায়গায় লেবার, মাটি সেটিং করে বস্তায় এবং পলিথিন দিয়ে, যাতে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে ২-১ জায়গায় নদীবাঁধ ড্য়ামেজ, সেগুলোয় যাতে জল না ঢোকে এলাকায়, তার জন্য় কিন্তু সবাই সজাগ আছে। 


আরও পড়ুন, রেমালের জেরে আরও এক মৃত্যু, শোকের ছায়া মৌসুনি দ্বীপে..


অন্য়দিকে, রেমালের জেরে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে ফুঁসছে ডাসা নদী।রূপমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের কুমিরমারি গ্রামে বাঁধের বেশ কিছুটা এলাকায় রবিবারই ফাটল দেখা যায়। গ্রামের ভিতর কাঁচা মাটির বাঁধ। মাটি ধুয়ে যাওয়ায় বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রেমালের প্রভাবে উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবন অংশ হিঙ্গলগঞ্জের রূপমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের কুমিরমারি গ্রাম। এখানে তার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ডাসা নদী। ডাসা নদীর বাঁধের বেহাল দশা। কয়েকটা জায়গায় ফাটল, কয়েকটা জায়গায় বাঁধ তৈরিই হয়নি। যখনই ভারী বর্ষণ হয় আতঙ্কে থাকেন গ্রামের বাসিন্দারা। দুর্যোগ এলে আতঙ্কে রাতে ঘুমতে পারেন না। রেমালের প্রভাবে যে ভারী বর্ষণ হচ্ছে, বাঁধের একটা অংশ প্লাবিত হয়ে গেছে। গোটা গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।