সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ১৭ এপ্রিলের মধ্যে কর্মচারীদের সঙ্গে রাজ্যকে আলোচনায় বসার নির্দেশ হাইকোর্টের। 'কর্মচারী সংগঠনের তরফে ৩ জনের নাম দিতে হবে। এই তিনজনের সঙ্গে সরকার আলোচনায় বসবে', নির্দেশ হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের।
'মুখ্যসচিব, অর্থসচিব সহ দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিরা কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে কথা বলুন। কর্মচারীরা বারবার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন, সরকারের পদক্ষেপের প্রয়োজন', পরামর্শ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের।


কর্মচারীদের প্রতি প্রশ্ন:
'এই মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, কর্মচারী সংগঠনগুলি কি অপেক্ষা করতে পারছে না?', প্রশ্ন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির। তখন কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবী বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী আমাদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন, তার বিরুদ্ধেই আমাদের পেনডাউন'।
তারপরেই প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, 'এই সমস্যার জন্য তো বেশ কিছু আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের উপায় রয়েছে'।


মহাকরণ থেকে নিউ সেক্রেটারিয়েট, বকেয়া DA-র দাবিতে এবং DA-আন্দোলনকারীদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজ্যজুড়ে ১২ ঘণ্টা সরকারি দফতরে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। এই অচলাবস্থা কাটাতে এবার রাজ্য় সরকারকে কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। 


১৭ই এপ্রিলের মধ্য়ে মুখ্যসচিব, অর্থসচিব সহ দ্বায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিদের, কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার নির্দেশ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। সরকারি কর্মচারীদের কর্মবিরতির বিরোধিতায় হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন এক আইনজীবী। সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি বলেন, 'কর্মচারীরা বারবার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন। সরকারের পদক্ষেপের প্রয়োজন। আজকে (বৃহস্পতিবার) কর্মবিরতির কারণে ৪৩৬ কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। অনেক মানুষ দূর থেকে ট্রেনে - বাসে করে আসেন। আজকেও (বৃহস্পতিবার) কাজে আসবেন। কাজ হবে না ফেরত যাবেন। সবাই তো আর্থিক ভাবে সেভাবে সক্ষম নন। এই পরিস্থিতির একটা সমাধান দরকার। আবার যদি ১৫ দিন পর, এই ধরনের কর্মবিরতি বা পেনডাউন হয়, তাহলে কী হবে?'


এক DA আন্দোলনকারী জানিয়েছেন যে তাঁরা হাইকোর্টের রায়ে আশাবাদী। কিন্তু এই সরকারকে বিশ্বাস নেই বলে জানান তিনি। কারণ আগেও হাইকোর্ট রায় দিয়েছে। সেই রায়কে চ্য়ালেঞ্জ করে প্রথমে ডিভিশন বেঞ্চ, তারপর সুপ্রিম কোর্টে গেছে। এদিন, রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের তরফে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তার বিরুদ্ধেই এই পেনডাউন। তখন বিচারপতি বলেন, 'এই সমস্যার জন্য তো বেশ কিছু আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার উপায় রয়েছে।' এরপর রাজ্য় সরকারের উদ্দেশ্য়ে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, 'সরকারি কর্মীরা আজকে অফিসে যাচ্ছেন? হাসপাতালগুলির কী অবস্থা? উত্তরে, রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবী জানান, জরুরি পরিষেবা চালু আছে। এরপর, ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আদালতকে জরুরি পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।' 
রাজ্য সরকারকে চাপে রাখতে আগামী সোম-মঙ্গল দিল্লির যন্তর মন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি নিতে চলেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করতে পারেন DA-আন্দোলনকারীরা। 


আরও পড়ুন: হনুমান জয়ন্তীতে সাধারণের মাঝে রাজ্যপাল, দিলেন পুজো, খেলেন ছাতুর সরবত