আবির দত্ত ও মোহন প্রসাদ, দার্জিলিং: আগামীকাল পাহাড়ে ১২ ঘণ্টা বন‍্ধের ডাক দিয়েছে হামরো পার্টি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ধর্মঘট আটকাতে তৎপর প্রশাসন। আজ বিকেল থেকেই নজরদারি শুরু করবে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙে দোকানপাট বন্ধ থাকে। ধর্মঘট মোকাবিলায় শুধুমাত্র শৈলশহরেই ২ হাজার পুলিশ থাকবে। দার্জিলিং শহরে ১০টি মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik 2023) কেন্দ্রেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।


ধর্মঘট আটকাতে তৎপরতা: জোর করে ধর্মঘট করাতে গেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। কালিম্পঙেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। মিরিক ও কার্সিয়ঙেও একইরকম নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য পুলিশের তরফে ২টি হেল্প লাইন চালু করা হচ্ছে। নম্বরগুলি হল, 035422-52057 এবং 91478-89078। এর পাশাপাশি, দার্জিলিঙের ভানুভবনে বিনয় তামাং-সহ হামরো পার্টি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ৯ জন জিটিএ সদস্যের ২৪ ঘণ্টার প্রতীকী অনশন আজই শেষ হওয়ার কথা। অনশনকারীদের হঠাতে রাতে ভানুভবনে যান প্রশাসনিক আধিকারিকরা। যদিও পুলিশের প্রস্তাবে সাড়া দেননি অনশনকারীরা।


বৃহস্পতিবার, মাধ্য়মিক পরীক্ষা শুরুর দিন পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বন্‍ধ-এর ডাক দিয়েছে হামরো পার্টি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তারই পাল্টা কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্য়মন্ত্রী। গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেউ রাস্তায় বসে পড়ল, আর একটা ছাত্রছাত্রী স্কুলে গিয়ে পৌঁছতে পারল না, পরীক্ষা দিতে পারল না, তার দায়বদ্ধতা কে নেবে? কেউ যেন ভুলেও একাজ করবেন না। যদি কেউ মনে করে, আমার পলিটিক্য়াল প্রোগ্রাম ৫ বছরে ১ বার, বন্‍ধ করে দেখাই আমার ক্ষমতা, আমি পরিষ্কার বলে যাচ্ছি, কোনও বন্‍ধ... হবে না।’’


বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব ও গোর্খা জনজাতি প্রসঙ্গে শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়ের একটি মন্তব্য়ের প্রতিবাদে এবং পৃথক গোর্খাল্য়ান্ডের দাবিতে মঙ্গলবার, দার্জিলিঙে ভানু ভবন চত্বরে ২৪ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচিতে বসেন বিনয় তামাং, হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অজয় এডওয়ার্ড-সহ জিটিএ-র ৯ সদস্য। পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার, সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত পাহাড়ে বন্‍ধ-এরও ডাক দেন তাঁরা।


সোমবার বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব আনেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মন। সেই প্রস্তাবের পক্ষে বলতে গিয়ে, ইতিহাসের সূত্র ধরে, গোর্খা ও উপজাতিদের কথা তুলে ধরেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়। বক্তৃতায় গোর্খা ও উপজাতিদের প্রসঙ্গে 'বহিরাগত' ও 'অনুপ্রবেশকারী' এই শব্দদুটি নিয়ে আপত্তি তোলে বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ, গোর্খা ও আদিবাসী জনজাতির জন্য় এই মন্তব্য় অপমানজনক। শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়কে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবি তুলে মঙ্গলবার বিধানসভায় পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। কার্শিয়ঙেও পোস্টার টাঙিয়ে প্রতিবাদ জানায় বিজেপি। যদিও, হামরো পার্টি এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তরফে জানানো হয়েছে, বন্‍ধ হলেও, জরুরি পরিষেবায় ছাড় দেওয়া হবে। পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হবে না।


আরও পড়ুন: Calcutta High Court: '৮৮ জনের ভূমিকা প্রমাণ করার মতো ভিডিও রেকর্ডিং আছে তো?' কড়া প্রশ্নের মুখে রাজ্য