রঞ্জিত সাউ, বিধাননগর: সল্টলেকে মা-মেয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। আজ সকালে সিডি ব্লকের একটি ফ্ল্যাট থেকে মা ও মেয়ের দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মায়ের দেহ পড়ে ছিল মেঝেয়, মেয়ের দেহ খাটে। পুলিশ সূত্রে দাবি, ঘর থেকে মিলেছে সুইসাইড নোট।  প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন দু’জন। একমাস আগে মহিলার স্বামী মারা যান। তারপর ৩০ বছরের মেয়েকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটেই থাকতেন মহিলা। পরিবার সূত্রে দাবি, লকডাউনের পর থেকে ব্যবসায় মন্দা চলছিল। সেই কারণেই মানসিক চাপে ছিলেন মা-মেয়ে। 


সল্টলেকে মা-মেয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু: কলকাতায় ১২ দিনে ৩ জন মডেল-অভিনেত্রীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় পড়েছে। এরই মধ্যে সল্টলেকে মা ও মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় দানা বাঁধল রহস্য। পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পারলৌকিক ক্রিয়া করার জন্য সুইসাইড নোটে আবেদন জানানো হয় প্রশাসনকে। খরচ কোথা থেকে হবে সেই তথ্যও ছিল সুইসাইড নোটে। শুক্রবার সকালে সল্টলেকের সিডি ব্লকের এই ফ্ল্যাটের তিনতলা থেকে উদ্ধার হয় মেয়ে স্নেহা ঘোষ এবং তাঁর মা সুপর্ণা ঘোষের মৃতদেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনতলার এই ঘরে কিছু একটা যে ঘটেছে তা বোঝাতে, কলের ট্যাপ খুলে বেসিনের মুখ আটকানো হয় গ্লাস ও টিস্যু পেপার দিয়ে। তার ফলে গোটা ঘর জলে ভেসে যায়। জল উপচে সিঁড়ি বেয়ে নীচে চলে আসে। তা দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। ডাকাডাকি ও ফোন করে সাড়া না পাওয়ায়, খবর দেওয়া হয় বিধাননগর উত্তর থানায়। দরজা ভেঙে মা ও মেয়ের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।


প্রতিবেশী পারমিতা ভৌমিক জানান, “দেখি সমানে জল গড়াচ্ছে, ফোন করছি কেউ তুলছে না। দরজায় ধাক্কা দিই তাও কেউ খুলছে না।’’ একমাস আগে শারীরিক অসুস্থার কারণে মৃত্যু হয় বছর পঞ্চান্নর সুপর্ণার স্বামী স্নেহাংশু ঘোষের। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, করোনা আবহে স্নেহাংশুর ব্যবসা ভাল চলছিল না। গৃহকর্তার মৃত্যুর পর, মা ও মেয়ে কার্যত নিজেদের গুটিয়ে ফেলেন। প্রতিবেশী টুটু দত্তর কথায়, “ওঁর স্বামীর একটা ব্যবসা ছিল। করোনার কারণে ব্যবসা খারাপ ছিল, শারীরিক অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়।’’


প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আগাম বেতন দিয়ে গৃহকর্ত্রী পরিচারিকাকে জানিয়ে দেন কয়েকদিন আসতে হবে না। তার মধ্যেই এই ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর তিন পাতার সুইসাইড নোটে একাকীত্বের কথা উঠে এসেছে। পারলৌকিক ক্রিয়ার জন্য ২০ হাজার টাকা আলমারিতে রাখা আছে সে কথা লেখা হয় সুইসাইড নোটে। বিধাননগর পুরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুলসী সিন্হা রায় বলেন, “প্রচন্ড মানসিক অবসাদ থেকে এমন হয়েছে। পরিচারিকাকে বলেন ১০ দিন না আসতে। ২০ হাজার টাকা রেখে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, তিন পাতার সুইসাইড নোটের পাশাপাশি, ঘর থেকে একটি কীটনাশকের স্প্রে উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদের কারণে আত্মহত্যা করেছেন মা-মেয়ে।


আরও পড়ুন: Train Cancel: ব্যান্ডেল-শক্তিগড় শাখায় দুপুর থেকে ৭২ ঘণ্টা পাওয়ার ব্লক, প্রবল দুর্ভোগের আশঙ্কা