অরিত্রিক ভট্টাচার্য ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: বউবাজারে (Bowbazar) ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ভাঙা নিয়ে দিনভর জটিলতা। আজ দুর্গাপিটুরি লেনের দুটি বাড়ি আংশিক ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কবে আবার ফিরে পাবেন মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু? ভিটে হারিয়ে দিশেহারা বাসিন্দারা।


বাড়ির ভাঙার সিদ্ধান্ত:  এতদিনের আশ্রয়, ইঁট-কাঠ-সিমেন্টের আস্তরণে গাঁথা সুখ-দুঃখের মুহূর্ত। কিন্তু বউবাজারে মেট্রোয় কাজের জেরে ধসের কারণে ফের ঘরছাড়া হয়েছে একাধিক পরিবার। ফের আশ্রয় নিতে হয়েছে হোটেলে। কিন্তু নিজেদের এতদিনের বসত ভিটের কী হবে? আর কি ফেরা যাবে নিজের বাড়িতে? বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের মনে এখন এসব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। শনিবার দুটি বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় KMRCL। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত নিয়েও তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক বলেন, “আমার ঘরে ভাঙার মতো অবস্থাই নয়। হঠাত্‍ কাল ৫টায় খবর আসে জিনিস বের করতে হবে। তাহলে আগে কেন বললনা? ৪টে ঘরের জিনিস কোথায় নিয়ে যাব?’’ ক্ষতিগ্রস্ত আরেক বাড়ির মালিকের কথায়, “ছেলেটা উচ্চমাধ্যমিক দেবে। ভবিষ্যতে কী হবে!’’


বাড়ি ভাঙা নিয়ে এই অনিশ্চয়তার তৈরি হওয়ায় মেট্রো কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন স্থানীয় বিধায়ক ও কাউন্সিলর। চৌরঙ্গীর তৃণমূল বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মেট্রো নিজেরাই কনফিউজড। একপক্ষ বলছে ভাঙবে, একপক্ষ বলছে ভাঙবে না।’’এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি কি ভাঙা হবে? না, ভাঙা হবে না? যদি বাড়ি ভাঙা হয়, তাহলে পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে? এতগুলো সংশয়ের মধ্যেই রবিবার মেট্রোর নির্মাণকারী সংস্থা কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কলকাতা পুরসভার বৈঠক হয়। 


বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার প্রজেক্ট ডিরেক্টর রূপক সরকার বলেন, “ফার্স্ট স্টেপে আমরা পুরোটা ভাঙব না। যতটা দরকার, ততটা করব। ধরুণ, এপার্টটা ভাঙার পর, আর ভাঙার দরকার হল না। তাহলে, আর ভাঙব না। হয়তো, ৩টে বাড়িই ভাঙতে হতে পারে। ২ টো বাড়ি মেট্রোর জন্য। আরেকটা আমাদের জন্য নয়।’’ সূত্রের খবর, সোমবার দুটি বাড়ি আংশিক ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি বাড়ির আলাদা করে সার্ভে করা হবে। কোনও বাড়ি ভাঙতে গেলে, পাশের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা, এই ব্যাপারগুলি দেখা হবে।


আরও পড়ুন: West Midnapore: বেলদায় আইএনটিটিইউসির বিরুদ্ধে রেল লাইনের একাংশের কাজ বন্ধ করার অভিযোগ