কলকাতা: হাইকোর্টে পিছোল ডিএ মামলার শুনানি। নথি আদানপ্রদানে দেরি হওয়ার জন্যই পিছিয়ে দেওয়া হল শুনানি। আগামীকাল দুপুর দু’টোয় মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে। রায় পুনর্বিবেচনার খুব বেশি সুযোগ নেই বলেই জানিয়েছেন বিচারপতি হরিশ টন্ডন।
ডিএ-অভিযোগ: ডিএ নিয়ে টালবাহানা চলছেই। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা নিয়েও বারবার অভিযোগ উঠেছে। এই রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ডিএ- কেন্দ্রের তুলনায় অনেক কম। প্রায় ৩১ শতাংশ ডিএ বকেয়া। নবান্ন সূত্রে দাবি, সরাসরি রাজ্য সরকারি চাকরির প্রায় ৪ লক্ষ পদ ফাঁকা রয়েছে। স্কুল, কলেজে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ হচ্ছে না।
ডিএ-র দাবিতে এবার শহরজুড়ে মিছিল। যোগ দিল সরকারি কর্মচারীদের ২৯টি সংগঠন। গত শনিবার স্বচ্ছভাবে স্থায়ী সরকারি নিয়োগের দাবিতে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল শুরু হয়েছিল। ধর্মতলায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত যায় ২৯টি সরকারি কর্মচারী সংগঠনের এই মিছিল। রাজ্য সরকার পুজো অনুদান দিলেও, প্রাপ্য ডিএ কেন মিলছে না, প্রশ্ন মিছিলে সামিল শিক্ষক, নার্স-সহ সরকারি কর্মচারীদের।
প্রেক্ষাপট: সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা ৩ মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু, মহার্ঘভাতা মেটানো তো দূর, আড়াই মাস পরে সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে ফের আদালতে যায় রাজ্য সরকার। তা নিয়েই ফের শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক চাপানউতোর।
এরই মধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে এবছর পুজো কমিটিগুলির জন্য বিরাট অনুদান ঘোষণা করা হয়। এরপরই বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে, ৩১% বকেয়া DA মেটাতে হবে। DA’র দাবি না মানলে, আগামীদিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে। রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেশ কয়েকটি সংগঠনের যৌথমঞ্চ থেকে দেওয়া হয় এমনই হুঁশিয়ারি।
পুজোর অনুদান, অথচ ডিএ নয় কেন, প্রশ্ন: ৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে, ৬০ হাজার টাকা করে পুজোর অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাত্ অনুদান বাবদ রাজ্য সরকারের খরচ হবে ২৫৮ কোটি টাকা! এ দিকে, সরকারি কর্মীদের বকেয়া DA মিটিয়ে দিতে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে, মুখ্যমন্ত্রীর পুজোয় অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত খারিজের আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে ৩-৩টে জনস্বার্থ মামলা। মামলাকারীর প্রশ্ন, আদালতের নির্দেশ মেনে সরকারি কর্মচারীদের DA না দিয়ে, কেন পুজোয় অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?
রাজ্য সরকার এই ঘোষণা করা মাত্র তাদের একহাত নিয়েছে সিপিএম। তাদের প্রশ্ন, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা যেখানে দিতে পারছে না সরকার, যেখানে ঋণের বোঝা লাগাতার বেড়েই চলেছে, সেখানে শুধু রাজনৈতিক লাভের স্বার্থে অনুদানের ঘোষণা কেন? এই পরিস্থিতিতেই শনিবার ৯টি সরকারি কর্মচারী সংগঠন ডিএ-র দাবিতে এবার শহরজুড়ে মিছিল করল ।