মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ইঞ্জিনিয়ারিং (Engineering) পাস করেও চাকরি মেলেনি বলে দাবি। দুর্গাপুরে (Durgapur) জাতীয় সড়কের (National High Way) ধারে চায়ের দোকান খুলেছেন দুই ইঞ্জিনিয়ার ভাই। তা নিয়ে সরগম শিল্পশহরের রাজনীতি।
দুই ভাই সুমন কর আর সমিত কর। দু’জনেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা (Diploma in Engineering) করেছেন। এখন চায়ের দোকান (Tea Shop) চালাচ্ছেন তাঁরা। পশ্চিম বর্ধমানের (West Burdwan) শিল্পশহর দুর্গাপুর। সেখানে ডিভিসি মোড়ের কাছে দু-নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে চা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন দুই ইঞ্জিনিয়ার ভাই। দু’জনেরই দাবি, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েও চাকরি মেলেনি। পেটের দায়ে চায়ের স্টল খুলতে হয়েছে তাঁদের।
ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা চা-বিক্রেতা সুমন করের কথায়, “অনেকেই বলেছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে চা ব্যবসা! কিন্তু আমরা চা ব্যবসাটাই মন দিয়ে করছি।‘’ পেশায় ফুল বিক্রেতা বাবা অনেক কষ্ট করে দুই ছেলেকে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে থেকে পড়িয়েছিলেন। পরিবার সূত্রে খবর, ২০১৬ সালে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিপ্লোমা কোর্স শেষ করে বড় ছেলে সুমন ক্যাম্পাসিংয়ে চাকরি পান। ভিন রাজ্যে চাকরিতে যোগ দেন তিনি।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বাবা-মায়ের আর্জিতে ঘরে ফিরে আসেন। কাঁকসার বাঁশকোপাতে অটোমোবাইল শোরুমে কাজে যোগ দিলেও, সেখানে নামমাত্র বেতন মিলছিল বলে অভিযোগ। ছোট ছেলে সমিতের দাবি, ২০২০ সালে পাস করার পর কোনও চাকরিই পাননি। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা আরেক চা-বিক্রেতা সমিত কর বলেন, মেকানিক্যাল পড়ে চাকরি পাইনি। তাই ব্যবসায় মন দিয়েছি।
চা-বিক্রেতাদের মা সরস্বতী কর বলেন, কাজ না পেয়েই চায়ের দোকান খুলতে হয়েছে ছেলেদের। ওদের ভাল হোক। শিল্পশহরে দুই ইঞ্জিনিয়ার ভাইয়ের চা-ব্যবসাকে ঘিরে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপির সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত বলেন, কর্মসংস্থানের এই হাল। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে চায়ের দোকান দিতে হচ্ছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সিপিএম সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল। ছোট থেকে কারখানা দেখে এসেছি। সেখানেই যদি এই ছবি হয়, তা হলে রাজ্যে চাকরির কী হাল বোঝাই যায়।)>>
পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা তথা দুর্গাপুর পুরসভার বরো চেয়ারম্যান সুনীল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বামেরা শিল্প ধংস করেছে। বিজেপি শিল্প আনেনি। ভালই তো করেছে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। চায়ের দোকান করে তো মোদিও প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।’’
শহরাঞ্চলে উন্নতির সূচকের নিরিখে নীতি আয়োগের সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেশের ৫৬টি শহরের মধ্যে সব থেকে পেছনে রয়েছে কলকাতার নাম। ভদ্রস্থ কাজের সুযোগ এবং আর্থিক বৃদ্ধির মাপকাঠিতে মহানগরের প্রাপ্ত প্রাপ্ত নম্বর ১০০-তে ৩। তার মধ্যে নতুন বিতর্ক শিল্পশহর দুর্গাপুরে।
আরও পড়ুন: South Dinajpur News: লক্ষ্য পুরভোট, দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রস্তুতি শুরু বিজেপির