ঝিলম করঞ্জাই ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা: রাজ্যজুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্য়া। হাসপাতালে হাসপাতালে বেডের আকাল। বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, এম আর বাঙুরে বেড খালি নেই একটিও। যদিও, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দাবি করা হচ্ছে যে, টেস্টের পরিমাণ বাড়ায়, ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্য়াও বাড়ছে। ডেঙ্গি (Dengue) ইস্যুকে কেন্দ্র করে তুমুল তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। 


ভয়ঙ্কর ডেঙ্গি পরিস্থিতি রাজ্যে। হাসপাতালে হাসপাতালে বেডের সঙ্কট চলছে। আকাল দেখা যাচ্ছে রক্তের। শহরজুড়ে ডেঙ্গি আক্রান্ত ও ডেঙ্গি সন্দেহে ভর্তির সংখ্য়া যে হারে বাড়ছে তাতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরে বহুক্ষেত্রেই একটি বেড পেতে সমস্য়ায় পড়ছেন রোগীরা। আমরি হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন ৮৮ জন। তার মধ্য়ে ৭ জন ICU-তে চিকিৎসাধীন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আরও ১৮ জন ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গি আক্রান্তদের জন্য বরাদ্দ একটি বেডও আর খালি নেই এম আর বাঙুরে। একই পরিস্থিতি, বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালের। ৪০টি বেডেই ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। খোলা হয়েছে HDU. 


বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ডেঙ্গি পজিটিভ ও ডেঙ্গি আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি রয়েছেন ৫৫ জন। যার মধ্য়ে ৩-৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। ৩০ জনের বেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত চিকিৎসাধীন পিয়ারলেস হাসপাতালে। একটিও বেড খালি নেই। ইএম বাইপাসের ধারে প্রায় সব হাসপাতালেই গড়ে ২০ থেকে ২৫ জন ডেঙ্গি পজিটিভ অথবা ডেঙ্গি আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি রয়েছেন। যদিও, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দাবি করা হচ্ছে যে, টেস্টের পরিমাণ বাড়ায়, ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্য়াও বাড়ছে। 


সার্বিক ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে রবিবার সকালে স্বরাষ্ট্রসচিব, জেলাশাসক, পুরসভার কমিশনার, বিভিন্ন জেলার মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। স্বরাষ্ট্র সচিব প্রত্যেক জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে অযথা জল জমে থাকছে। সেগুলির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন্দ্রকে আপনারাই চিঠি লিখুন। উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, মালদা, মুর্শিদাবাদের একাধিক অঞ্চলে ডেঙ্গি সংক্রমণ বাড়ছে। এই জেলাগুলির স্পর্শকাতর অঞ্চলে ডেঙ্গি সংক্রমণ কমানোর জন্য সতর্ক হতে হবে। রোগীকে কোনওভাবেই রেফার করা যাবে না বলে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ও সুপারদের নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্র সচিব।


এদিকে, ডেঙ্গি ইস্যুকে কেন্দ্র করে তুমুল তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) তোপ, 'ডেঙ্গি ভয়াবহ। ভারত সরকার ফেব্রুয়ারি মাসে যা করতে বলেছিল। তা করেনি এরা। টাকা অন্যখাতে খরচ করা হয়েছে। সরকার ব্যর্থ।' পাল্টা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, 'আমাদের সরকার ভাল করে কাজ করছে। এটা একটা অন্যরকম সমস্য়া।'


এদিন, স্বরাষ্ট্রসচিবের ডাকা বৈঠকে প্রতিবেশী বাংলাদেশের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। পরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, বাংলাদেশের ডেঙ্গি সংক্রমণ বাড়ায়, সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সংক্রমণ বাড়ছে। তাই সীমান্তবর্তী জেলাগুলিকে এই ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ২ দিনের বেশি জ্বর থাকলেই ডেঙ্গি পরীক্ষা বাধ্য়তামূলক। 


আরও পড়ুন: ২ কেজির জিলিপি! বিশ্বকর্মা পুজোয় 'ডেস্টিনেশন' কেঞ্জাকুড়া