পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: পুজো পরবের সঙ্গে আপাদমস্তক জড়িয়ে রয়েছে মেলা। আর বাঙালির মেলা হলেই সেখানে জিলিপি (Jalebi) থাকবে। এখানেও রয়েছে। কিন্তু এই জিলিপি সেই জিলিপি নয়। আমাদের চেনা জিলিপি যেমন হয়, তার থেকে এর চেহারা অনেকটাই আলাদা। থালার উপরে রাখা গোল এবং প্যাঁচালো এই জিলিপির ওজন প্রায় ২ কিলো।
এমন জিলিপি মিলছে এই বাংলাতেই। পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) বাঁকুড়া শহর, সেখান থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে কেঞ্জাকুড়া গ্রাম। সেখানেই মিলছে এমন জিলিপি। এমন অবশ্য নতুন নয়। বিশ্বকর্মা পুজো ও ভাদু পুজো উপলক্ষে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া গ্রামে প্রতিবছরই এমন জাম্বো জিলিপি তৈরি হয়। আর তা কেনার জন্য ভিড় করেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। এক ক্রেতা কুহেলি গোস্বামী বলেন, 'প্রতিবছর এখানে আসি। এই জিলিপি কেনার জন্য সবসময় আসি। আত্মীয়দের পাঠাই। সবাই খুব পছন্দ করেন।' আরও এক ক্রেতা প্রদীপ মোদক বলেন, 'অন্য জেলায় থাকা আত্মীয়দের কাছেও পাঠানো হয় এটা। খুব ভাল লাগে। আমি ছোটবেলা থেকে দেখছি।'
বাঁকুড়ার (Bankura) দ্বারকেশ্বর নদীর তীরে অবস্থিত কেঞ্জাকুড়া খুবই প্রাচীন জনপদ। এই এলাকাতেই রয়েছে জেলার বিখ্যাত ব্রোঞ্জ শিল্প কেন্দ্র। বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া বাংলার লোকসংস্কৃতি চর্চার অন্যতম স্থান। বহু পুরনো সময় থেকেই এই এলাকা বিশ্বকর্মা ও ভাদুপুজোর জন্য বিখ্যাত। প্রতিবছর এই ভাদুপুজো এবং বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে, কেঞ্জাকুড়ার মিষ্টি প্রস্তুতকারকরা এমন বিশাল আকারের জিলিপি তৈরি করে। একটি জিলিপির ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে শুরু করে প্রায় দুই কেজি পর্যন্ত হয়। এই জাম্বো জিলিপি বাংলার ভাদ্র মাসের ২৭ তারিখ থেকে আশ্বিন মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত তৈরি করা হয়। ওজন করে বিক্রি করা হয় ওই জিলিপি। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১৫০ টাকা করে। ব্যবসায়ী মুক্তা দত্ত বলেন, 'প্রতিবছর অনেক জায়গায় এই জিলিপি। বাইরে থেকে আসে নিয়ে যায়। আমিই জানি অন্তত ৭০-৮০ বছর ধরে চলছে এই জিলিপি।' বেশ কিছুদিন ধরে রেখে খাওয়া যায় এই জিলিপি। কারিগর ফটিক রায় বলেন, 'অন্তত ১০ দিন থাকবে এই জিলিপি। ৫০০ গ্রাম থেকে শুরু হয়। অন্তত ৩ কিলো পর্যন্তও তৈরি হয় এই জিলিপি।'
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল কবিগুরুর শান্তিনিকেতন, বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্রের তকমা দিল UNESCO