কলকাতা: একদিনে তিন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর খবর। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃ্ত্যু হল বাঙুর অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা ২৬ বছরের রিঙ্কি রায় মজুমদারের। ১৮ জুলাই নার্সিংহোমে ভর্তি হওয়ার পর ২১ জুলাই মৃত্যু। অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যু তাহেরপুরের বাসিন্দা ৬৬ বছরের হরিপদ মিস্ত্রির। ১৯ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন হরিপদ মিস্ত্রি। বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত উমা সরকারের মৃত্যু। নদিয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা ছিলেন উমা সরকার। প্রথমে তাঁকে রানাঘাট হাসপাতালে,এর সেখান থেকে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কলকাতা বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকালই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী পল্লবী দে-র । 


বর্ষা শুরু হতেই ভয় দেখাচ্ছে ডেঙ্গি। এই পরিস্থিতিতে, কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি লিখলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রত্যেক বছরই এই সময় একটি সার্ভে চালায় কলকাতা পুরসভা। চিঠিতে মেয়র লিখেছেন, তপসিয়া, বালিগঞ্জ ও ভবানীপুর থানায় পড়ে থাকা পরিত্যক্ত গাড়িতে বংশবিস্তার করছে মশা। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা গুলিকে ব্যবস্থা নিতে বলার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে অনুরোধ করেছেন মেয়র। 


কলকাতায় ফের ডেঙ্গির হানা। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা, ক্লাস সিক্সের ছাত্রীর। ডেথ সার্টিফিকেটে সিভিয়ার ডেঙ্গি, মাল্টি অর্গান ফেলিওয়ের উল্লেখ। অন্যদিকে, ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় প্লেটলেটের ঘাটতি ঠেকাতে প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন গাইডলাইন জারি ।


বর্ষা শুরু হতে না হতেই ফের খালি হল এক মায়ের কোল! মৃত্য়ু হল ডেঙ্গি আক্রান্ত ক্লাস সিক্সের পল্লবী দের। পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা এই পরিবারের ছোট্ট সদস্যের চিরবিদায়ে বাড়িতে নেমে এল শোকের পাহাড়।


পরিবার সূত্রে খবর, জ্বর, বমি, গায়ে ব্যথার উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার পার্ক সার্কাসের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ১০ বছরের পল্লবীকে। ৯ হাজারে নেমে গিয়েছিল প্লেটলেট, রাখা হয়েছিল ভেন্টিলেশনে। 


শনিবার দুপুরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা পল্লবী দে-র। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে পল্লবীর ডেথ সার্টিফিকেটে সিভিয়ার ডেঙ্গি, মাল্টি অর্গান ফেলিওয়ের উল্লেখ করা হয়েছে।


এবার ডেঙ্গি মোকাবিলায় আগেভাগেই ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় প্লেটলেট-এর ঘাটতি ঠেকাতে প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন গাইডলাইন জারি করল স্বাস্থ্য ভবন। গাইডলাইন অনুযায়ী, রোগীর প্লেটলেট কাউন্ট ১০ হাজার এর নীচে গেলে তবেই তাকে প্লেটলেট দেওয়া যাবে ।


যেসব রোগীর প্লেটলেট কাউন্ট ১০ থেকে ২০ হাজারের মধ্যে, তাদের ক্ষেত্রে রক্তপাত না হলে প্লেটলেট দেওয়ার প্রয়োজন নেই।  ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের যদি Thrombocytopenia দেখা যায় তাহলে, তাদের ক্রনিক প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন দেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্লেটলেটের প্রয়োজন থাকলে প্রেসক্রিপশনে মেডিক্যাল অফিসারকে কোন গ্রুপের প্লেটলেট সেটা উল্লেখ করতে হবে।


মোট ৫৭টি সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের থেকে প্লেটলেট সরবরাহের ব্যবস্থা রাখছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। উল্লেখ্য, গত বছর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে রাজ্যের তরফে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, বাংলায়  ৬৭ হাজার ২৭১ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হন। সরকারি মতে গত বছর, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩০।


স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গতবছর যে সমস্ত জায়গা ডেঙ্গি প্রবণ ছিল, সেই জায়গাগুলিতে বাড়তি নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গি মোকাবিলায় আগাম সতর্কতা হিসাবে মশারি ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কোথাও যাতে জল জমে না থাকে সেবিষয়ে পুরকর্মীদের নজরদারির চালাতে বলা হয়েছে।