সন্দীপ সরকার, ঝিলম করঞ্জাই এবং অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: বৃষ্টির মধ্যেই জমা জলে মশার (Mosquito) আতঙ্ক! কলকাতা (Kolkata) থেকে জেলা, চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি (Dengue), ম্যালেরিয়া (Malaria)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘরের মধ্যে বা আশেপাশে জল জমতে দেবেন না। জ্বর হলে অবহেলা করবেন না। পরামর্শ নিন চিকিত্সকের (Doctor)।
কী পরিস্থিতি?
জ্বর, উদ্বেগ, আতঙ্ক! রাজ্যে এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি, মারণ ভাইরাস করোনা। এরই মধ্যে, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া। রাজ্যে আবার ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে মশাবাহিত দুই রোগ।হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। হচ্ছে মৃত্যুও। নিম্নচাপের জেরে দফায় দফায় চলছে বৃষ্টি। এরকম বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় জল জমে যায়।
আর সেই জমা জলই ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গির মশার আঁতুড়ঘর। এই আবহাওয়ায়, মশাবাহিত রোগ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিত্সকরা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দ্বৈপায়ন বিশ্বাস বলেন, " মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে, তার ফলে ডেঙ্গির বিপদ বাড়ছে।"
ডেঙ্গি পরিসংখ্যান
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ৪ - ১১ অগাস্ট, ৭দিনে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪৮ জন। ১১ - ১৭ অগাস্ট, এই ক’দিনে আক্রান্তের সংখ্যাটা ৫৩৫! চলতি বছর, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ১৮৪ জন! শুধু যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাই-ই নয়। একাধিক ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর খবরও সামনে আসছে।
সোমবার, ১৫ অগাস্ট, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় হাওড়ার বাসিন্দা বছর ২২ -এর এক তরতাজা যুবকের। এমাসের শুরুতেই, ৮ অগাস্ট, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়, কালীঘাটের বাসিন্দা, বছর ১২-র এক স্কুল ছাত্রের। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি প্রবণ জেলাগুলিকে সনাক্ত করে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
আরও পড়ুন, অন্তঃসত্ত্বাকে 'লাথি' মারার প্রতিবাদে সোমবার নারকেলডাঙা থানা ঘেরাও বিজেপির
কোন কোন জেলা সেই তালিকায় রয়েছে?
সেই তালিকায় রয়েছে, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, হুগলি ও জলপাইগুড়ি। কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, "গত ২ বছরের সঙ্গে তুলনা করবেন না। তখন বাড়িতেই ছিলেন। ২০১৯-এ যদি দেখেন, তার তুলনায় কম। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গির প্রভাব। কাল থেকে ওয়ার্ডগুলোয় নজর দেব।"
শুধু ডেঙ্গিই নয়, বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তর সংখ্যাও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, অগাস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত, রাজ্যে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৭২ জন।
চিকিত্সকরা বলছেন, জ্বর, প্রচণ্ড গায়ে হাতে ব্যথা, গায়ে লাল ছোপ ছোপ দাগ, চুলকানি সঙ্গে বমি, এসব লক্ষণ দেখা দিলে দেরি করবেন না। সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন। মশাবাহিত রোগের হাত থেকে বাঁচতে, ঘরের মধ্যে বা আশেপাশে জল জমতে দেবেন না। মশারি ব্যবহার করুন।