সন্দীপ সরকার ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : ক্রমশ চওড়া হচ্ছে ডেঙ্গির থাবা (Dengue Scare)। গত একদিনে চার জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। বেসরকারি মতে, যার জেরে ডেঙ্গিতের মৃত্যুর সংখ্যা ছুঁয়েছে ৪০। গত ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য জানাচ্ছে, রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ২৮ হাজার। ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের মাঝেই ডেঙ্গির উপসর্গ বদল ঘটেছে বলেই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা (Doctors)।


ডেঙ্গি হলে আক্রান্তের যে গাঁটে গাঁটে ব্যথা থাকার কথা, তেমনটা অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে না। সামান্য সর্দি-কাশি আক্রান্তের ক্ষেত্রেও পরীক্ষা করলে দেখা যাচ্ছে, তারা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ! আর উপসর্গহীন এই ধরনের ডেঙ্গি আক্রান্তদের (Dengue Affected) দেখেই উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসকদের মধ্যে। আর তার জেরেই চিকিৎসকদের পরামর্শ জ্বর হলে সময় নষ্ট করবেন না, দ্রুত করিয়ে নিন ডেঙ্গির পরীক্ষা (Dengue Test)।


ডেঙ্গির উপসর্গ আগের তুলনায় অনেকটাই বদলে গেছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ডেঙ্গির সাধারণ উপসর্গ (Dengue Symptoms) অনেক সময়ই থাকছে না আক্রান্তের শরীরে। চিকিৎসক সুমন পোদ্দার জানাচ্ছেন, ২ টো জিনিস দেখতে পাচ্ছি। ডেঙ্গি মানেই যে গাঁটে গাঁটে ব্যথা, ব্রেক বোন ফিভার বলতাম যাকে। এবার ব্যথা নেই দেখা যাচ্ছে । আগে আমরা জানতাম একটা বাচ্চা সর্দি-কাশি নিয়ে আসছে। আমরা ধরে নিতাম ডেঙ্গি নয় ফ্লু। এবার পরে পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গি। 


ডেঙ্গি নিয়ে বাড়তে থাকা উদ্বেগ ঘিরে চিকিৎসক জয়দেব রায় বলেছেন, বাড়িতে থেকে সময় নষ্ট করবেন না। জ্বর হলেই ডেঙ্গি পরীক্ষা করতে হবে। সিচুয়েশন হাতের বাইরে চলে গেলে আর কিছু করার থাকবে না। সাবধানতা। সচেতনতা। দুটোই নিতে হয়। মানুষ প্রশাসন দুজনকেই সক্রিয় হতে হবে।


চিকিৎসক যোগীরাজ রায়ের মত, সবাইকে সতর্ক হতে হবে। জল জমানো যাবে না। পরীক্ষা করাতে হবে দ্রুত। পাশাপাশি প্রশাসনকে গোটা পরিস্থিতি সামলাতে আরও উদ্যোগী হতে হবে বলেই মত তাঁদের। প্রসঙ্গত, রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে বাড়তি উদ্যোগও নিতে শুরু করেছে প্রশাসন।


এর মাঝেই জানানো হয়েছে, ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া নিয়ে বাড়তে থাকা উদ্বেগের জেরে এবার থেকে সন্ধেতেও খোলা থাকবে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আউটডোর (Outdoor)। সপ্তাহে ২ দিন, মঙ্গল ও শুক্রবার সন্ধেতেও খোলা থাকবে আউটডোর। বাকি ৪ দিন সকালে খোলা থাকবে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র।


আরও পড়ুন- সরকারি মতে ৩, বেসরকারিতে ডেঙ্গিতে মৃত্যু ৩৬ জনের, রাজ্যে এখনও আক্রান্ত ২৮ হাজার ৬৭ জন