সন্দীপ সরকার, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮-৯ জন পড়ুয়া ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। এবার কি করোনা কালের মতো অনলাইনে ক্লাসে ফিরবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয় ( Jadavpur University ) ? মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের বক্তব্য়ে তেমন জল্পনাই জোরালো হচ্ছে। 


ডেঙ্গির ( Dengue ) দাপট ফেরাচ্ছে করোনাকালের ( Coronavirus ) আতঙ্ক? ফিরছে সেই অনলাইনে ক্লাসের দিন? মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের বক্তব্য়ে তেমন জল্পনাই জোরালো হচ্ছে। এদিন তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮-৯ জন পড়ুয়া ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে যাদবপুরের মেডিক্য়াল সুপার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগে, পড়ুয়াদের বাড়ি পাঠিয়ে অনলাইনে ক্লাস করা যেতে পারে। সোমবার রাজ্যপালও তাঁর কাছে যাদবপুরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চান বলে জানান অস্থায়ী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ।


ক্রমশ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে রাজ্য়ের ডেঙ্গি পরিস্থিতি। ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুধুমাত্র কলকাতাতেই আক্রান্ত হয়েছেন, ৪ হাজার ৪২৭ জন। ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। ১১ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক পড়ুয়ার। যাদবপুরের ইলেকট্রিক্য়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতকোত্তরের ছাত্র ওয়াহিদুর রহমানের ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির উল্লেখ করা হয়। 


২১ সেপ্টেম্বর যাদবপুর ক্য়াম্পাসের পরিস্থিতি দেখে উষ্মা প্রকাশ করেন ডেপুটি মেয়র। এরপর, মঙ্গলবার যাদবপুরে অনলাইনে ক্লাস চালুর জল্পনা বাড়ালেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য।  অন্যদিকে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর মতে , 'সামনে অনেক পরীক্ষা আছে, আগের চেয়ে পরিস্থিতি ভাল।'  জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলছেন, 'অবশ্যই দেখতে হবে। এটা ইসিতে আলোচনার বিষয় নয়। আবাসিকদের নিরাপত্তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ' । শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য় রেজিস্ট্রারের বক্তব্য়েই কার্যত সায় দিয়েছেন। অন্যদিকে কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছে টিএমসিপি। ছাত্রনেতা সঞ্জীব প্রামানিক বলেন, অবশ্যই অনলাইন ক্লাস চালু করতে চাওয়া ব্যর্থতা। রেজিস্ট্রারকে অতীন ঘোষ বলে যাওয়ার পরও কিছুই করতে পারেননি। 


আগামী দিনে এখন কী হয়, কোন পথে হাঁটে যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ? সেটাই দেখার। 

আরও পড়ুন : 


শুধু বনগাঁ ব্লকেই ডেঙ্গি আক্রান্ত ৬০০ র উপর, উত্তর ২৪ পরগণায় ডেঙ্গি - ত্রাস




অন্যদিকে, যাদবপুরে মঙ্গলবারই  সমস্ত ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মাঝরাত পেরিয়ে গেলেও খোলেনি যাদবপুর-জট। এক্সিকিউটিভ  কাউন্সিলের ১২ ঘণ্টার বৈঠক অসম্পূর্ণ বলে জানান অন্তর্বর্তী
উপাচার্য। অসুস্থতার কথা বলে রাত ২টো নাগাদ বেরিয়ে যান বুদ্ধদেব সাউ। সূত্রের খবর, যাদবপুরে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে পেশ করার দাবি জানায় ছাত্র সংগঠনগুলি। সেই রিপোর্ট অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটি ও অ্যান্টি র‍্যাগিং স্কোয়াডে কাছে পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়। ছাত্রদের দাবি, নতুন পড়ুয়াদের জন্য পৃথক হস্টেলের দাবিকে মান্যতা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ১০ অক্টোবরের মধ্যে তা কার্যকর করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, দাবি পূরণ না হওয়ায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে পড়ুয়ারা।