ঝিলম করঞ্জাই, মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুজিত মণ্ডল, কলকাতা : কলকাতা ছাড়িয়ে জেলাতেও বাড়ছে ডেঙ্গির দাপট। রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে শনিবার থেকে পরিদর্শন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৬টি দল দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ঘুরে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। 


ডেঙ্গির কোন উপসর্গ থাকলে হাসপাতালে যাবে? 
জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে,



  • শরীর দুর্বল হলে

  • মাথা ঘুরলে

  • অস্থিরভাব

  •  সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে হাসপাতালে যাবেন।

    এছাড়াও রক্তক্ষরণ, কালসিটে দেখা দিলে, শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট, বমি, পেটে ব্যথা, কম প্রস্রাবের মতো সমস্যা দেখা দিলে হাসপাতালে যেতে হবে। 


কোন কোন জেলায় বাড়তি নজর ? 
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া ও বীরভূমের কয়েকটি জায়গায় বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দুর্গাপুরের পলাশডিহা অঞ্চলে অল্প সময়ে অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। গত ৬ দিনে ওই এলাকায় ২৩ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। এলাকা পরিদর্শন করেছে স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ দল। জেলার সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে দৈনিক রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রানাঘাটের ডেঙ্গি পরিস্থিতির দিকেও নজর রাখছে স্বাস্থ্য দফতর। সেখানেও টিম পাঠানো হয়েছে। বেলেঘাটা আইডি-তে রানাঘাটের যে রোগিণীর মৃত্যু হয়েছে, তাঁকে একাধিক মেডিক্যাল কলেজ থেকে রেফার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কেন এমন ঘটল তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুর্গাপুরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সোমবার পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডের পলাশডিহায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। নদিয়ার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি এমনকী মুর্শিদাবাদ থেকে বহু রোগী আসেন, কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। কর্তৃপক্ষের দাবি, গত কয়েক দিনে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ২৯ জন ভর্তি হয়েছেন। জ্বর নিয়ে ভর্তি আছেন প্রায় ৭০ জন।

বৃষ্টির জমা জলই ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গির মশার আঁতুড়ঘর। এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যেই  বহু মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বাড়ছে। জ্বর হলে ফেলে না রাখা, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ও সবকটি রক্তপরীক্ষা করিয়ে ফেলা জরুরি। তাহলে বাড়িতেই কিন্তু আক্রান্তদের সুস্থ করে তোলা সম্ভব বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।