পার্থপ্রতিম ঘোষ, আশাবুল হোসেন ও মুন্না আগরওয়াল, কলকাতা: গঙ্গাসাগর ও কলকাতার কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও ডায়মন্ড হারবারে সংক্রমণের হার ৩ শতাংশের নীচে। এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে করোনা মোকাবিলায় ডায়মন্ড-মডেলের সাফল্যের দাবি করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সফল মডেল কেন বাংলার সব জেলায় কার্যকর করা হচ্ছে না? তৃণমূলকে নিশানা করে এই প্রশ্নই তুলছে বিরোধীরা।


ময়দানি ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে অমল দত্তর ডায়মন্ড মডেল। আর বাংলায় করোনার বাড়বাড়ন্তের আবহে, আরেক ডায়মন্ড-মডেল পথ দেখাচ্ছে বলে দাবি করছে তৃণমূল। সৌজন্যে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ আশেপাশের জেলাগুলিতে যখন করোনা হু হু করে বাড়ছে, তখন প্রশাসনিক কড়াকড়ির ফলে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। যা প্রশংসাও পেয়েছে চিকিৎসক মহলে। 


সোমবার ডায়মন্ড-মডেলের সাফল্য তুলে ধরে ফেসবুকে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, আরও একবার করে দেখাল ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র। গঙ্গাসাগর ও কলকাতার কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও ডায়মন্ড হারবারে সংক্রমণের হার ৩ শতাংশের নীচে। এই যুদ্ধে লাগাতার সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য ডায়মন্ড হারবারের মানুষকে ধন্যবাদ।


জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রবিবার গোটা রাজ্যে সংক্রমণের হার ছিল ২৭.৭৩ শতাংশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সংক্রমণের হার ছিল ১৬.৫৩ শতাংশ সেখানে সেই জেলারই ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে সংক্রমণের হার নেমে এসেছে ২.৮২ শতাংশে।


তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র বিশ্বজিৎ দেব বলেন, "এটা সায়েন্টিফিক, পথ দেখাল সবাইকে, অভিষেক পারলে, বাকি ৫৪২ জন এমপি কেন করতে পারবে না? সবারই উচিত এটাতে ফলো করা, শুধু বাংলায় নয় সর্বত্র ফলো করা উচিত।" বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন, যদি সত্যিই ডায়মন্ড-মডেলের সাহায্যে করোনা সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়ে থাকে, তাহলে কেন সেই মডেল গোটা রাজ্যে প্রয়োগ করা হচ্ছে না? 


 প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, "তাহলে উনি তো প্রকারান্তরে স্বীকার করছেন যে ওনার পিসি ব্যর্থ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে? যদি ডায়মন্ড হারবার মডেল সফল হয়, তাহলে বাকি বাংলা বিফল হল কেন? এটাকে রোখা যেত, আটকানো যেত, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিত থাকলে...যদি ডায়মন্ড হারবারে সংক্রমণ কমে, তাহলে বাংলায় কমছে না কেন? এই প্রশ্ন ভাইপো তুলেছেন, পিসির জবাব দেওয়া উচিত।" 


এই প্রেক্ষাপটেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেকের মধ্যে বিভেদের দাবি আরও উস্কে তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার ভাইপো অভিষেকের মধ্যে পুরোদমে যুদ্ধ চলছে। ডায়মন্ড হারবারে পোস্টারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নেই। উল্টোদিকে এটা দেখে অবাক হওয়ার কোনও কারণ নেই যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) বিরুদ্ধে পুরনো নেতাদের ময়দানে নামিয়েছেন এবং কোনও কৃতিত্ব যাতে তিনি (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) না পান তার জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে কাজে লাগাচ্ছেন। 


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "আমি ট্যুইট মালব্যকে বলব তথাগত রায়ের কামিনী কাঞ্চন নিয়ে ট্যুইটের জবাব দিন।" বিজেপির দাবিতে আমল না দিয়ে ডায়মন্ড হারবার মডেলকে সামনে রেখে চলছে তৃণমূলের প্রচার। গিরিশ পার্ক-সহ বিভিন্ন জায়গায়, পড়েছে পোস্টার।