অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: সিপিএম পার্টি অফিসে ঢুকে তৃণমূলের তরফে জগন্নাথ দেবের প্রসাদ বিতরণ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা। সারা রাজ্যের সাথে আলিপুরদুয়ারেও চলছে দিঘার জগন্নাথদেবের প্রসাদ বিতরণ। গ্রাম থেকে শহর,  তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা সকলেই সেই প্রসাদ বিতরণে ব্যাস্ত। পালা করে ঢাক, ঢোল-করতাল নিয়ে উৎসবের মেজাজে জয়-জগন্নাথ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র। 

আরও পড়ুন, 'মা' থেকে 'কথাঞ্জলী', এবার রাজ্যের স্কুলের লাইব্রেরিতে মুখ্যমন্ত্রীর বই, বিদ্যালয়গুলিতে বইয়ের তালিকা পাঠাল রাজ্য সরকার

তৃণমূল পরিচালিত আলিপুরদুয়ার পুরসভার কাউন্সিলর থেকে পুরপতি সকলেই সেই প্রসাদ বিতরণে জোর দিয়েছেন নিজ নিজ ওয়ার্ডে। আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর, তার নিজের ১ নং ওয়ার্ডে শনিবার দিঘার সেই প্রসাদ বিতরণ করেন। সেই ওয়ার্ড সংলগ্ন শহরের কোর্ট-মোর এলাকায় বক্সা ফিডার রোডে এদিন তিনি প্রসাদ বিতরণ করতে করতে প্রবেশ করেন সিপিএমের , রাজ্য সরকারি কর্মচারী সমিতি ভবন ও সিপিএম পার্টি অফিসে (সদর এরিয়া কমেটি, আলিপুরদুয়ার) । সেখানে উপস্থিত সদস্যদের হাতে তুলে দেন জগন্নাথ দেবের প্রসাদের প্যাকেট। নিজস্ব কার্যালয়ে উপস্থিত সিপিএম সদস্যরা পুর-চেয়ারম্যানের আচমকা আগমনে অপ্রস্তুত হলেও সাদরেই গ্রহণ করেন জগন্নাথ দেবের প্রসাদ। 

পুর-চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর বলেন,'আমার ওয়ার্ডে অবস্থিত সিপিএমের অফিস ও কর্মচারী ভবনে উপস্থিত  সদস্যদের অনুমতি নিয়েই প্রবেশ করেছিলাম। ইচ্ছুক ব্যাক্তিদের প্রসাদ বিতরণ করেছি। জোর করিনি, তারা সাদরে গ্রহণ করেছে।' কিন্তু পার্টি অফিসে ঢুকে তৃণমূলের এই প্রসাদ বিতরণকে মোটেই ভালো চোখে নেয়নি জেলা সিপিএম।

সিপিএম জেলা সম্পাদক কিশোর দাস বলেন, তৃণমূলের এই জগন্নাথ দেবের প্রসাদতো সরকারিভাবে রেশনে দেবার কথা, তারা বাড়ি বাড়ি পৌছে দিচ্ছে তাতেও আপত্তি নেই আমাদের। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে এসে প্রসাদ বিতরণের এই সৌজন্যতা সঠিক নয়। এটা অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করে সস্তার এবং গিমিকের রাজনীতি করছে তৃণমূল। এটা আমরা পছন্দ করিনি, এমন আচরণ পরিত্যাগ করা প্রয়োজন। এটা সৌজন্যের রাজনীতি হতে পারে না।  তৃণমূল-বিজেপি এই দুটি দল মন্দির-মসজিদ, ধর্ম নিয়ে মানুষকে বিভাজিত করছে। ঘৃণ্য রাজনীতি করে একের অপরের প্রতি টেক্কা দেবার প্রচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ সিপিএম জেলা সম্পাদক কিশোর দাসের। 

এই ঘটনায় তৃণমূল-সিপিএম কে একযোগে আক্রমণ জেলা বিজেপি সভাপতি মিঠু দাসের। তিনি বলেন, একই কয়েনের এপিঠ-ওপিঠ। একে অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছে সিপিএম-তৃণমূল। প্রসাদের অছিলায় সম্পর্ক দৃঢ় করছে। মিঠু দাস বলেন, 'এই প্রসাদের নামে আবেগের রাজনীতি করে সনাতনীদের ভোট ব্যাঙ্কের গ্রহণযোগ্যতা কিছুতেই পাবেনা তৃণমূল। কারণ তারা নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়কে তোষণ করছে। সনাতনীদের উপর হামলায় চুপ থাকছে তৃণমূল নেতৃত্ব। ফলে মানুষ স্বিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে তৃণমূলকে উৎখাতের।'