রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: টানা কদিন ধরে তাঁর রাজনীতিতে থাকা নিয়ে চরম জল্পনার পর ইতিমধ্য়েই স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ দেব।আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে ঘাটাল থেকেই লড়বেন তিনি। যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে ইঙ্গিত দিলেন তিনি। আর এই প্রসঙ্গেই এদিন প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। 


কেন্দ্র না দিলে  ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান-এর টাকা দেবে রাজ্য, সম্প্রতি বলেছেন দেব। আর এরপরেই এদিন দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া,' সে তো ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। দিদি অনেকবার বলেছেন। মন্ত্রীরা বলেছেন। উনিও বলে যাচ্ছেন। ওনাকে দু দুবার জিতিয়ে ঘাটালের মানুষ কি অপরাধ করেছে? কেন্দ্র তার বরাদ্দ দিয়েছে। বাকি পয়সা আপনি দিন। ৪০ শতাংশ দিতে পারছেন না। ৬০ শতাংশ কেন্দ্র দিয়েছে। কাজ শুরু করতে পারেননি। ওখানকার মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেবে। আর জলের মধ্যেই বসবাস করবে।' 


আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে ঘাটাল থেকেই লড়বেন তিনি। যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে ইঙ্গিত দিলেন দেব। সেই সঙ্গে দাবি করলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের জোরালো চেষ্টা করবে তৃণমূল। শীর্ষ নেতৃত্বের এই প্রতিশ্রুতিতেই গলেছে বরফ। এদিকে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পদ থেকে শঙ্কর দলুইকে সরিয়ে দিল তৃণমূল নেতৃত্ব।


শনিবার তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেবের বৈঠকে মিলেছিল বরফ গলার ইঙ্গিত। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই, দেবের সঙ্গে যাঁর সংঘাতের জল্পনায় এত উথাল-পাথাল চলছিল,সেই শঙ্কর দলুইকে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পদ থেকেই সরিয়ে দিল তৃণমূল। রাজনীতিতে পোড় খাওয়া রিয়েল শঙ্কর, কার্যত পরাস্ত হলেন রিলের শঙ্করের কাছে!শঙ্কর দলুইয়ের পরিবর্তে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হল, জেলা পরিষদেরই আরেক সদস্য, ডেবরার প্রাক্তন বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতিকে।পশ্চিম মেদিনীপুর তৃণমূল চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত ও জেলা পরিষদ সদস্য শঙ্কর দলুই বলেন, রাধাকান্ত মাইতিকে স্বাগত জানাব। দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা নিশ্চয়ই দলের ভালর জন্যই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


 ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান রাধাকান্ত মাইতি বলেন , দল সিদ্ধান্ত যা নিয়েছে, সেইটাকে মাথা পেতে নিয়েছি। এখানে কাকে সরিয়ে করল, দলের ব্যাপার। এটা আমার কোনও ব্যাপার নেই। দেবের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন আপনার? প্রশ্নের উত্তর তিনি বলেন, কোনওদিনই খারাপ নয়, আমার সঙ্গে।দেব নিজেও দাবি করেছেন, এই রদবদলে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই।


আরও পড়ুন, স্কুলের জমি দখল করে 'মার্কেট কমপ্লেক্স' ! কাঠগড়ায় TMC পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি


তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দেব বলেছেন, আমি ১০ বছরে দলের কোনও সাংগঠনিক ইন্টারফেয়ারেন্স কোনওদিন করিনি। কাকে রাখা উচিত, কাকে রাখা উচিত নয়, আমার মনে হয় দল এটা আমার চেয়ে অনেক বেশি ভাল জানে। আজকে যদি শঙ্কর দলুই যদি চেঞ্জ হয়ে থাকে সেটা আমার মধ্যে কিছু যদি আমার পাওয়ারে থাকত তাহলে ও আসতই না, এরকমও তো হতে পারত। মানে আমার যদি ওই সাহসটা বা ওই পাওয়ারটা যদি থাকত। আমার মনে হয় এটা পুরোপুরি সাংগঠনিক একটা ব্যাপার। আমার মনে হয় যারা করেছেন তারা হয়তো ভাল বলতে পারবেন।