সুজিত মণ্ডল, কল্যাণী :  গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের পর ইডির জালে অনুব্রত। দিল্লি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড়। সায়গলের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা। এই নিয়ে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতাকে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতিবিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিছুদিন আগে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অনুব্রত গড়ে দাঁড়িয়েই জেলবন্দি অনুব্রতকে বাঘের সঙ্গে তুলনা করেন ফিরহাদ হাকিম। সেই মন্তব্যকেই কটাক্ষ করে এদিন দিলীপ বলেন, ‘একজন মন্ত্রী গিয়ে বললেন, বাঘ নাকি খাঁচায় আছে, বাঘ না বাঘরোল বোঝা যাচ্ছে না’


' শিয়ালরা ল্যাজ গুটিয়ে পালিয়ে যায় '
ফিরহাদ সেদিন বীরভূমে দাঁড়িয়েই বলেন, 'বাঘ না থাকলে শিয়ালরা লাফালাফি করে।বাঘ ফিরে এলে শিয়ালরা ল্যাজ গুটিয়ে পালিয়ে যায়। বীরভূমের বাঘকে তোমরা কিছুদিনের জন্য খাঁচায় রেখেছ। সারাজীবন আটকে রাখতে পারবে না। সেই বাঘ বেরিয়ে এলে আজকের শিয়ালরা খাঁচায় ঢুকে যাবে।' রামপুরহাটের জনসভা থেকে হুঁশিয়ারি মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের। এর আগে জেল থেকে বেরোলে অনুব্রতকে বীরের সম্মান দিতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। 

অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে দিল্লিতে?
বৃহস্পতিবার  গরু পাচার মামলায়, অনুব্রত মণ্ডলকে জেলেই গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সাড়ে ৫ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে হেফাজতে নিল ED। সূত্রের দাবি, অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরার কথাও ভাবা হতে পারে। এই  প্রেক্ষিতে কল্যাণীতে চায়ে পে চর্চায় দিলীপ ঘোষ বলেন,  ‘এখন সুদ জমছে, একসময় সব হিসেব হবে। তৃণমূল নেতাদের সব হিসেব দিয়ে যেতে হবে। একজন মন্ত্রী গিয়ে বললেন, বাঘ নাকি খাঁচায় আছে। বাঘ না বাঘরোল বোঝা যাচ্ছে না। '

১১০ কেজি ওজন ৭৫ কেজি !
ইডি সূত্রে দাবি, অনুব্রত মণ্ডল জেরায় যে তথ্য দিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। কোথাও তিনি অসহযোগিতা করছেন বলে মনে হলে, তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরার কথাও ভাবা হতে পারে। 
অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী, গরুপাচার মামলায় ধৃত সায়গল হোসেনকেও হেফাজতে নিয়ে, দিল্লি নিয়ে গেছে ইডি। ইডি সূত্রে দাবি, আগামীদিনে প্রয়োজন হলে অনুব্রত মণ্ডলকেও দিল্লি নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে আবেদন জানানো হতে পারে। এই প্রসঙ্গে দিলীপের বিদ্রুপ, ' দিল্লি গেলেই টের পাবেন ওখানকার রুটি আর চা কেমন। দিল্লি গেলে হয়ত ১১০ কেজি ওজন ৭৫ কেজি হয়ে আসবে।' নাম না করে অনুব্রতকে কটাক্ষ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতির।


ইডি সূত্রে দাবি, অনুব্রতকে জেরার জন্য ৪ পাতার প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। বেশিরভাগ প্রশ্নই ছিল মূলত বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি ও তাঁর পরিবারের সম্পত্তি সংক্রান্ত। যেমন - তাঁর নামে যে বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে, তার উৎস কী? অনুব্রত ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টে বিপুল অঙ্কের নগদ টাকা জমা পড়ল কোথা থেকে? এর সঙ্গে কি গরু পাচারের টাকার কোনও যোগ আছে? ইডি সূত্রে দাবি, এদিনের জেরার উদ্দেশ্য ছিল, গরু পাচারের টাকা অনুব্রত মণ্ডলের কাছে এসেছে কি না এবং সেই টাকায় বেনামে সম্পত্তি কেনা হয়েছে কি না, সেবিষয়ে তথ্য জোগাড় করা।