কলকাতা: বকেয়া পুরসভা নির্বাচনে (WB Municipal Polls 2022) দলের ফলাফল হতাশাজনক। তা নিয়ে আত্নবিশ্লেষণে মগ্ন দল। তবে জয়-পরাজয় নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই (Mamata Banerjee) কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন বিজেপি-র (BJP) প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। উত্তরপ্রদেশে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে মমতাকে। তা নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করেছেন দিলীপ।
এখ জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ ঘিরে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তা নিয়ে মুখ খোলেন দিলীপও। কিন্তু তাঁর বক্তব্য, “নারী কেন, উনি তো বাঘিনী! বাঘিনী আবার নারী হয় নাকি! উত্তরপ্রদেশে গিয়ে নারী হয়ে গেলেন উনি!”
দিলীপ আরও বলেন, “উনি গিয়েছেন, ভালই করেছেন। কাশী গিয়ে অন্তত দেখে আসুন উন্নয়ন কাকে বলে। তার পর কালীঘাটকে অন্তত কাশী করার চেষ্টা করে দেখুন। উনি এখানে সবাইকে কালো পতাকা দেখান। এক আধবার নিজেও দেখে বুঝুন যে কেমন লাগে।”
বুধবার প্রকাশিত ১০৮ পুরসভার নির্বাচনী ফলাফলে একটি পুরসভাও দখল করতে পারেনি বিজেপি। তবে তার জন্যও তৃণমূলকেই দায়ী করেন দিলীপ। তাঁর অভিযোগ, “বিজেপি-কে নিশানা করা হয়েছে। ভোটের পর আণাদের ৬০ জন কর্মী খুন হয়েছেন। মামলা হয়েছে ১২ হাজার কর্মীর নামে। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের কর্মীরা ভয় পেয়েছেন। অনেকে নির্বাচনে অংশই নেননি। বেরোননি, ভেবেছেন ফের যদি মার এবং কেস খেতে হয়! তবে সকলেই দলের সঙ্গে রয়েছেন। আগামী দিনে নিজেরাও সক্রিয় হবেন, দলকেও সক্রিয় করবেন।”
পুরসভা নির্বাচনের ফলাফলে বিজেপি-কে টপকাতে পেরেছে সিপিএম। তা নিয়েও তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন দিলীপ। তাঁর দাবি, বিজেপি-কে পর্যুদস্ত করতে তৃণমূলই সিপিএম-কে (CPM) দু’নম্বরে তুলে আনার চেষ্টা করছে। প্রথমে কংগ্রেসকে আনতে চেয়েছিল। কিন্তু ওষুধ খাইয়ে কিছু করা যাচ্ছে না। বামেদের মানুষ স্বীকারই করছেন না বলে দাবি করেন দিলীপ।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। সেখানে সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের হয়ে প্রচার করতে বুধবারই রওনা দেন মমতা। সেখানে বারাণসী বিমানবন্দরে নেমে সড়কপথে বারাণসী ঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘাটের প্রায় দু’কিলোমিটার আগে, একটি জায়গায় তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি।
বিক্ষোভে বেশ কিছু ক্ষণ আটকে থাকার পর একসময় গাড়ি থেকে নেমে আসেন মমতা। বিক্ষোভকারী বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “বারাণসীতে যেভাবে তাঁকে অভিনন্দন জানানো হল, তার জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। কিন্তু এইভাবে তাঁকে ভয় দেখানো যাবে না।”
মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরা কোনওরকমে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পর, দশাশ্বমেধ ঘাটে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা গঙ্গারতি দেখেন তিনি। তবে তাঁর জন্য চেয়ারের বন্দোবস্ত করা হলেও, সাধারণ মানুষের সঙ্গে তিনিও ঘাটের সিড়িতে বসেই গঙ্গারতি দেখেন। সঙ্গে ছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা ও বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রী।