সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: হাইকোর্টে (high court) ফের ধাক্কা খেল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board Of Primary Education)। নিয়োগ নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (abhijit ganguly) নির্দেশই (verdict) বহাল (uphold) রাখল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ (division bench)। স্পষ্ট জানিয়ে দিল, ২০১৪-র টেটের (TET) ভিত্তিতেই প্রাথমিকের ৩ হাজার ৯২৯টি শূন্যপদে নিয়োগ (recruitment) হবে। ২০১৭ বা অন্য কোনও সালের টেট উত্তীর্ণরা এই শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অংশ নিতে পারবেন না।
কী বলল ডিভিশন বেঞ্চ?
এদিন হাইকোর্ট জানিয়েছে, ওই ৩ হাজার ৯২৯টি শূন্যপদে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। যে ২৫২ জন মামলা করেছেন তাঁরা যোগ্য হলে তবেই নিয়োগপত্র পাবেন, সে কথাও জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। গত সেপ্টেম্বরে প্রাথমিকের ৩ হাজার ৯২৯টি শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময়, ২৫২ জন প্রার্থী বিচারপতি গঙ্গাপাধ্যায়ের এজলাসে দাবি করেছিলেন, তাঁরাও এই পদে চাকরি পাওয়ার যোগ্য। ফলে তাঁদের বিষয়টিও পর্ষদকে ভাবনাচিন্তা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নিয়োগ-নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় পর্ষদ। বলে তারা ২০২২ সালে প্রায় সাড়ে এগারো হাজার শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এদিন সেই মামলাতেই বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পর্ষদ যদি ওই ৩ হাজার ৯২৯টি শূন্যপদ ধরে ২০২২ সালে সাড়ে ১১ হাজার শূন্যপদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে থাকে তা হলে প্রথমেই ওই ৩ হাজার ৯২৯টি পদ হিসেব থেকে বাদ দিতে হবে। কারণ ওই পদগুলিতে ২০১৪-র টেটের ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। এ বাদে যে পদগুলি বাকি থাকবে তার নিয়োগে অংশ নিতে পারেন ২০১৭-র টেট উত্তীর্ণরা, জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, ২০১৭-র টেট প্রার্থীদের আর্জি ছিল, তাঁরাও যেন ৩ হাজার ৯২৯টি শূন্যপদে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন। সেই মর্মে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদনও করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এদিন তাঁদের সেই আবেদন খারিজ করল ডিভিশন বেঞ্চ। সব মিলিয়ে কার্যত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়েই সিলমোহর দিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যর বেঞ্চ।
প্রেক্ষাপট...
টেট-প্রার্থীদের আন্দোলনে গত কয়েক মাস ধরে উত্তপ্ত থেকেছে কলকাতা-সহ রাজ্য। হালেই আবার এক্সাইড মোড়ে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের জমায়েত-বিক্ষোভ ঘিরে ধুন্ধুমার বাঁধে, ঝরে রক্তও। চাকরিপ্রার্থীদের চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রিজন ভ্যানের নীচে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখান বেশ কিছু বিক্ষোভকারী। তাঁদের টেনে হিঁচড়ে বের করে পুলিশ। পুলিশের তাড়া খেয়ে বহু চাকরিপ্রার্থী ক্যামাক স্ট্রিটের দিকে দৌড়ে যান। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের সামনে শুরু হয় অবস্থান। তারপর বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে বিক্ষোভকারীদের টেনে হিঁচড়ে সেখান থেকে তুলে দেয়। গ্রেফতার করা হয় ২৮২ জন চাকরিপ্রার্থীকে। ওই দিনই এক বিক্ষোভকারীকে কামড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক মহিলা কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। পরে আবার বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করে পুলিশ। সব মিলিয়ে তুলকালাম।
আরও পড়ুন:প্রভাবশালী তত্ত্বে ফিরহাদের ‘বাঘ’ উপমার উল্লেখ আদালতে, ফের জামিনের আর্জি খারিজ অনুব্রতর