হিন্দোল দে, কলকাতা: এবিপি আনন্দর খবরের জের। লেদার কমপ্লেক্স থানার তারদায় বালি চুরি রুখতে সক্রিয় পুলিশ। বেআইনি বালি খাদানে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। যদিও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এবিপি আনন্দর খবর সম্প্রচারের পর পলাতক অভিযুক্তরা। 


এবিপি আনন্দর খবরের জেরে ফের নড়েচড়ে বসল পুলিশ ও প্রশাসন। লেদার কমপ্লেক্স থানার তারদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অবৈধ বালি খাদান পরিদর্শন করলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানিয়েছেন ভাঙড় ১-এর বিডিও এবং কলকাতা পুলিশের ইস্ট ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার। 


রাতের অন্ধকারে নয়, একেবারে দিনে দুপুরে! কার্যত পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় বালি চুরি! এবিপি আনন্দর 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' অনুষ্ঠানে সেই খবর দেখানো হতেই নড়েচড়ে বসল পুলিশ ও প্রশাসন। 


শুক্রবার সকালে লেদার কমপ্লেক্স থানার ওসি ও অ্যাডিশনাল ওসির নেতৃত্বে এলাকায় যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। অবৈধ বালি খাদান পরিদর্শন করেন তাঁরা। প্রত্যন্ত কোনও জেলা নয়, খোদ কলকাতা পুলিশের লেদার কমপ্লেক্স থানার তারদা পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা! সিলভার স্যান্ড বা সাদা বালি শুধু নয়, অভিযোগ, যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে পাচার হচ্ছিল শহর এবং শহরতলিতে।


ঘটনাস্থলে যেতেই ধরা পড়ে সেই ছবি। অবৈধ খাদানে যাঁদের দৌরাত্ম্য, ক্যামেরা দেখেই পড়ি মরি করে দৌড়তে শুরু করেন সেইসব কর্মীরা। একটু আগেই যিনি মেশিন দিয়ে বালি কাটছিলেন, আমাদের ক্যামেরা দেখে এমন ভান করলেন, যেন কিছুই জানেন না, আলের ধারে বসে, মোবাইলে গেম খেলছেন।


আর কর্মীরা যখন পালাচ্ছেন, তখন বেআইনি বালি খাদানের মালিক কী করেন! তিনিও দিলেন দৌড় লুকিয়ে পড়েন ঝোপে। বুধবার এবিপি আনন্দর 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' অনুষ্ঠানে দেখানো হয় এই খবর। শুরু হয় শোরগোল। তারপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বিজেপির অভিযোগ, ঘটনায় জড়িত তৃণমূল। অভিযুক্ত হিসেবে যাঁদের নাম উঠে আসছে, ঘটনার দিন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম আমরা। ঘটনায় পুিলশ ২টি পাম্প বাজেয়াপ্ত করা ছাড়া কাউকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।
 
ভাঙড় ১ -এর বিডিও দীপ্যমান মজুমদার বলছেন, এ বিষয়ে আগেও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এফআইআর রয়েছে। বেশ কিছু গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। আবার নতুন করে কিভাবে চলছে সেটা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেব। সারপ্রাইজ ভিজিট করা হবে। তবে এতকিছুর পরেও, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ওই এলাকায় কোনও অবৈধ বালি খাদান নেই।


এ প্রসঙ্গে ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সওকত মোল্লার মন্তব্য, তারদা অঞ্চলে কোন অবৈধ বালি খাদান নেই, হলেও মাটি কাটা হয়ে থাকতে পারে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সবটাই মিথ্যে। বিজেপির লোক এসব বলে।


কলকাতা পুলিশের ইস্ট ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার আরিশ বিলাল জানিয়েছেন, বিষয়টি সামনে আসার পরই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। কে কারা জড়িত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  পুলিশ সূত্রে খবর, ভাঙড় ১-এর বিএলএলআর-ওর অভিযোগের ভিত্তিতে লেদার কমপ্লেক্স থানায় একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।