ঝিলম করঞ্জাই ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ৬ থেকে বেড়ে রাজ্যে ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্তের সংখ্যা ১১ তে পৌঁছে গেছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক উড়ানের (International Flight ) ওপর কড়া নজরদারির সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য দফতর (WB Department Of Health)। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কিছু লোকাল ট্রেন কমানোর নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর (Cm Mamata Banerjee)।


এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Cm Mamata Banerjee) বলেন, 'ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটগুলো নিয়ে একটা ডিসিশন নাও'। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৩৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট (Omicron Variant)। এই ভ্যারিয়েন্ট এতটাই দ্রুত ছড়ায় যে, দু থেকে তিনদিনে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে। গত সপ্তাহেই সারা বিশ্বে ওমিক্রন আক্রান্তের হার ১১ শতাংশ বেড়েছে। ভারতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে আটশোর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। 


বাংলাতেও ৬ থেকে বেড়ে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১তে। এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে এক নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দেশের বাইরে থেকে যেসব যাত্রী রাজ্যে আসবেন, তাঁদের তালিকা ও তথ্য নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্য দফতরকে জানাতে হবে। 


কলকাতার পুর কমিশনার, সব জেলার জেলাশাসক, মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকদেরও নির্দেশিকা পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনও আন্তর্জাতিক উড়ানের যাত্রী কোভিড নেগেটিভ হলেও, ফোন করে তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজ নেবেন সংশ্লিষ্ট জেলার কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক। কোনও উপসর্গ আছে কিনা, তা জানতে চাওয়া হবে। উপসর্গ থাকলে তখনই নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।


 রিপোর্ট যদি পজিটিভ আসে, তাহলে নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠাতে হবে। হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে আক্রান্তকে। পাশাপাশি তাঁর সহযাত্রীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে হবে। আর রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও, ফের ৬ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে সেই ব্যক্তিকে। 


উপসর্গ না থাকলেও, অষ্টম দিনের মাথায় তাঁকে দ্বিতীয়বার করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য মনে করাবেন কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক। রাজ্যে ওমিক্রনের গ্রাফ যখন ফের ঊর্ধমুখী, তখন দূরপাল্লা ও লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।


মুখ্যমন্ত্রী  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দু’এক দিন টাইম দিয়ে, যাঁরা টিকিট কেটে রেখেছে, তাদের RTPCR করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নাও। লোকাল ট্রেনগুলোতেও এফেক্ট পড়বে। এখনই সব বন্ধ করতে যেও না, কিছু কমিয়ে দাও। পাবলিকের যেন অসুবিধে না হয়। যারা কলকাতায় যাবে, তাদের রুজি-রোজগার বন্ধ দীর্ঘদিন ধরে। একটু দেখে নাও, কাদের হচ্ছে বেশি। ট্রেনে যারা যাবেন প্রত্যেকে মাস্ক পরবে। যারা বিধি মেনে আসবেন, তাঁরা আসবেন।


চিকিত্‍সক দীপনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, আমরা এখানে যে পরিমাণ ভিড় দেখছি ২৫ ডিসেম্বর, বর্ষবরণের ভিড় আরও বাড়ার আশঙ্কা....সেসব মিলিয়ে ইমিডিয়েট পদক্ষেপ করতে হবে। দিল্লি, কর্ণাটকে হয়েছে, এ রাজ্যেও পদক্ষেপ করতে হবে। সব মিলিয়ে উত্‍সবের মরশুমে করোনা নিয়ে ফের একবার বাড়তে শুরু করেছে আশঙ্কা।