অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: মানসিক ভারসাম্যহীন (Mentally Disabled Man) যুবককে শেকল মুক্ত করতে যুবকের বাড়ি পৌঁছলেন আইসি, তৃণমূল নেতা ও চিকিৎসক। পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলো মালদা মেডিকেল কলেজে (Malda Medical College)। দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে রয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর (Harishchandrapur) গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কলম পাড়ার এক বাসিন্দা। তাঁর বয়স ২৮ বছর। বাবা বৃদ্ধ ভ্যানচালক। তাঁর পক্ষে ছেলের চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। ছেলের পাগলামো দিন দিন বেড়েই যাচ্ছিল। ক্রমেই মারমুখি হয়ে উঠছিলেন সেই যুবক। বাধ্য হয়েই যুবকের বাবা, মা তাঁকে শিকল পরিয়ে রেখেছিলেন।


যুবকের খবর ভাইরাল হতেই তৎপর প্রশাসন


এতদিন দেখা মেলেনি কোনও প্রশাসনিক আধিকারিকের। কিন্তু এই সংবাদ প্রকাশ্যে আসতেই সেই যুবককে শিকলমুক্ত করতে বাড়িতে এদিন পৌঁছে যান স্বয়ং আইসি। এছাড়াও তৃণমূল নেতা সঞ্জীব গুপ্তা, চিকিৎসক ছোটন মণ্ডল। বাড়িতে আসেন আরও অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা। 


 জেলা প্রশাসনের নির্দেশে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে এদিন সকাল হতেই শিকল মুক্ত করতে যুবকের বাড়ি পৌঁছালেন স্বয়ং আইসি দেওদূত গজমের, তৃণমূল নেতা সঞ্জীব গুপ্তা, চিকিৎসক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা বাড়িতে পৌঁছে যান। এদিন বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসা করেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এরপর সেই যুবককে শিকলমুক্ত করা হয়। চিকিৎসার জন্য মালদা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 


এদিন হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসক ছোটন মণ্ডল জানান, ''সংবাদমাধ্যমে খবর পেয়েই আমরা ওই ছেলেটির বাড়িতে ছুটে এসেছি। এখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পর তাকে আমরা মালদা নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখানেই তার পরবর্তী চিকিৎসা হবে।''


দীর্ঘ কয়েক বছর পর ছেলের চিকিৎসা শুরু হয় খুশি সেই যুবকের মা। তিনি বলছেন, ''অভাবের কারণে ছেলের দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছিল না। আজকে বাড়িতে ডাক্তারবাবুরা এসেছিলেন। তারা ছেলেকে নিয়ে মালদা গেলেন জানিয়েছেন সেখানে ছেলের ভালো চিকিৎসা হবে। ছেলে সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক এটাই আমি চাই।''


তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা জানান,  ''আমরা সংবাদ মাধ্যমের সামনে কথা দিয়েছিলাম ছেলেটির যাতে সমস্ত চিকিৎসা ভালোভাবে হয়, সেটা ব্যবস্থা করা হবে সেই কথাটাই আমরা রাখলাম। এতদিনেও কেন প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট হয়নি সেই ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়া হবে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে খুব তাড়াতাড়ি ওর প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করা যায়।''


আরও পড়ুন: আজ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে ফের পেশ করা হবে ইডি-র বিশেষ আদালতে