কলকাতা: আজ অষ্টমী। সকাল থেকেই শুরু দেবী পুজোর প্রস্তুতি। বাগবাজার সর্বজনীনে চলছে পুজোর আয়োজন। কলকাতার এই প্রাচীন পুজো শতবর্ষ পেরিয়েছে।
শতবর্ষ পেরনো পুজো:
এবার ১০৫ বছরে পা দিল বাগবাজার সর্বজনীনের পুজো। অনেকদিন ধরেই কলকাতার নানা নামকরা পুজো থিম পুজোয় মেতেছে। হাতেগোনা যে কয়েকটি বারোয়ারি পুজো এখনও সাবেকি পুজো করে আসছে। এটি সেগুলির মধ্যেই একটি। থিমের জোয়ারে গা না ভাসিয়ে, সাবেকি মেজাজ আঁকড়ে রয়েছে উত্তর কলকাতার এই পুজো। বরাবরের মতো এবারও প্রতিমার ডাকের সাজ।
সকালে আরতি শুরু হয়েছে বাগবাজার সর্বজনীনের পুজোয়। পঞ্জিকা, তিথি-নক্ষত্র মেনে কঠোর নিয়মে দেবী আরাধনা হয় এখানে। অঞ্জলি দেওয়ার জন্য ভিড় করেছেন দর্শনার্থীরা।
পুজোয় জড়িয়ে ইতিহাস:
বাগবাজার সর্বজনীনের পুজোর পরতে পরতে জড়িয়ে আছে ইতিহাস। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এই পুজোর সূচনা হয়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, নলিনীরঞ্জন সরকার-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। বাগবাজার সর্বজনীনের পুজোর একটি বিশেষ প্রথা হল বীরাষ্টমী। লাঠি খেলার মাধ্যমে বাগবাজার সর্বজনীনে বীরাষ্টমী প্রথা পালন করা হয়। ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার বিপ্লবীদের শরীরচর্চার অন্যতম অঙ্গ ছিল লাঠিখেলা, তরোয়াল খেলা এবং কুস্তি। ধীরে ধীরে তা মাতৃ আরাধনার অঙ্গ হয়ে যায়। সেই প্রথা মেনে এবারও মহাষ্টমীতে বাগবাজার সর্বজনীনে লাঠি খেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বেলুড় মঠেও তুঙ্গে ব্যস্ততা:
ইতিহাস, ঐতিহ্যের মেলবন্ধনে বেলুড় মঠে (Belur Math) কুমারী পুজো। দেবীকে মৃন্ময়ী রূপে আরাধনার পাশাপাশি কুমারীর মধ্যে মাতৃরূপ দর্শন, এই প্রথা মেনেই প্রতিবারের মতো এবারও বেলুড় মঠে কুমারী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। ৫-৭ বছর বয়সীদের নির্বাচন করা হয় কুমারীপুজোর জন্য। এবারের কুমারী সীমন্তিনী ঘোষাল। বয়স ৫ বছর ৭ মাস। সুভগা রূপে পুজো করা হল হাওড়ার বাগনানের সীমন্তিনীকে। ১৯০১ সালে মা সারদার উপস্থিতিতে ৯ জন কুমারীকে পুজো করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। সেই থেকেই চলে আসছে এই প্রথা। কুমারী পুজো দেখতে সকাল থেকেই বেলুড় মঠে রয়েছে ভিড় জমান ভক্তরা।
বাঁকুড়ার জয়রামবাটি শ্রী সারদা মায়ের জন্মভিটে। মহাষ্টমীতে তিথি মেনে সকাল ৯টায় জয়রামবাটি মাতৃ মন্দিরে শুরু হয় কুমারী পুজো। বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বাসিন্দা সাড়ে ৫ বছরের তুহিনা ভট্টাচার্যকে কোলে করে মণ্ডপে নিয়ে আসেন মহারাজরা। শাস্ত্রমতে কুমারী হিসেবে দেবীজ্ঞানে আরাধনা করা হয়।
আরও পড়ুন: গান-নাচ থেকে বাঙালি ভোজ! শারদোৎসবে মাতোয়ারা বার্লিন