কলকাতা: সারাদেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে নবরাত্রি (Navratri), চলছে বাঙালির সবথেকে বড়ো উৎসব দুর্গাপূজা (Durga puja)। নবরাত্রির অষ্টম দিনে পূজিতা হন মাতা মহাগৌরী। দেবী মহাগৌরী চতুর্ভূজা। এই রূপে মা দূর্গা ধীর-স্থির, শান্ত। মায়ের এই রূপের পূজা করলে দূর হয়ে যায় ভক্তের মনের সব পাপ। গল্পে প্রচলিত আছে, দীর্ঘদিন জঙ্গলে তপস্যা করার পর কালো হয়ে গিয়েছিল মা দূর্গার রং।


মহাদেব যখন গঙ্গাজল দিয়ে তাঁকে স্নান করান, তখন তিনি হয়ে ওঠেন গৌরবর্ণা। মায়ের এই নতুন রূপেরই নাম মহাগৌরী। প্রচলিত বিশ্বাস, নবরাত্রির অষ্টম রাতে তাঁর পুজো করলে সব পাপ ধুয়ে যায়। সাদা পোশাক পরিহিতা, চার হাত বিশিষ্টা দেবীর বাহন ষাঁড় ।


তিনি সন্তানবত্সলা, শিবসোহাগিনী, বিদ্যুদ্বর্ণা মা দুর্গার প্রসন্ন মূর্তি। কারও বাড়িতে বিবাহজনিত কোনও সমস্যায় এঁর ধ্যান করা খুব ভাল। দেবীর এক হাত শোভিত বরাভয় মুদ্রায়। বাকি তিন হাতে থাকে পদ্ম, ত্রিশূল এবং ডমরু। উপরের ডান হাতে রয়েছে ত্রিশূল এবং উপরের বাম হাতে একটি ডমরু ।  নীচের হাত দুটি অভয়া এবং বরামুদ্রার ভঙ্গিমায় থাকে। মাতা মহাগৌরীর এই রূপে দেবীর বাহন হল একটি ষাঁড়। দুর্গার এই রূপটিকে তাঁর গাত্র বর্ণের কারণে মহাগৌরী বলা হয়। পৌরাণিক মত অনুযায়ী,  দেবী শৈলপুত্রী (নবরাত্রির প্রথম দিনে এই মাতা পূজিতা হন) ১৬ বছর বয়সে অসামান্য সুন্দরী এবং গৌরবর্ণা  ছিলেন। এর ফলে তিনি দেবী মহাগৌরী হিসেবে পরিচিত হন।                                                                                  


শ্বেত বৃষ সমারূঢ়া শ্বেতাম্বর ধরা শুচিঃ,
মহাগৌরী শুভং দধান্মহোদৈ ব প্রমোদ্দা ।


যা দেবী সর্বভূতেষু মা মহাগৌরী রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ ॥
 
- এই বৈদিক মন্ত্রের দ্বারাই মূলত মাতা মহাগৌরীর বন্দনা করা হয়‌ মহাষ্টমীর দিনে। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, মাতা সমস্ত অশুভ শক্তিকে বিনাশ করেন এবং তাঁর আশীর্বাদে জীবন সম্পূর্ণভাবে সুখময় ও প্রেমময় হয়ে ওঠে। উজ্জ্বল সৌন্দর্যের প্রতীক এই দেবী অষ্টমীতে ভক্তদের মাধ্যমে আরাধিত হন। তাঁর নৈবেদ্যতে নারকেল রাখার রীতি রয়েছে।