বাপন সাঁতরা, হুগলি : দক্ষিণ বঙ্গে ভেসে গিয়েছে জেলার পর জেলা। বানভাসি পরিস্থিতিতে একটু শুকনো জমির খোঁজে মানুষ । আস্তে আস্তে জল নামতে শুরু করলেও, স্তস্তির চিহ্ন দেখতে পাচ্ছে না মানুষ। পুজোর আগে বৃষ্টির সঙ্কেত দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তাতে উদ্বেগ বাড়ছে। এরই মধ্যে খানাকুলে দেখা গেল এক মর্মান্তিক ছবি।


বন্যাবিধ্বস্ত খানাকুলে বোধনের আগেই যেন বিসর্জনের সুর। এখানকার  মৃৎশিল্পীদের কর্মশালা থেকেই বন্যার জলে ভেসে গিয়েছে একের পর এক প্রতিমা। বেশ কয়েকটি প্রতিমা দণ্ডায়মান কারাখানার ভিতরে বুক-জলে। বন্যার সময় প্রতিবারই প্রায় এখানে অনেকটা জল জমে যায়।  প্রতিমার মাটি কার্যত ধুয়ে যায়। এবারও তার অন্যথা নয়। পুজোর ঠিক মুখে মুখেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে। 


মাড়োখানার একটি কারখানায় ১০ টির বেশি প্রতিমা বন্যার জলে নষ্ট হয়ে যায়। শুধু মাড়োখানাই নয়, খানাকুলের একাধিক জায়গায় সুসজ্জিত প্রতিমা মণ্ডপে পাঠানোর আগেই এমন বিপত্তি ঘটে। এর ফলে মাথায় হাত পড়েছে মৃৎশিল্পীদের। পুজো আসতে আর হাতে গোনা দিন বাকি। এর মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির কি কোনও বদল আসবে ? পরিস্থিতি বদলালেও অর্ডার পাওয়া প্রতিমাগুলি এত কম সময়ে আবার তৈরি হবে কীভাবে, বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। 


খানাকুলের মাড়োখানার মৃৎশিল্পী বাবলু গায়েন, অর্ণব গায়েন -রা জানালেন, 'হাতে আর মাত্র কটা দিন। ক্ষতি তো যা হওয়ার হয়েছেই।  লোকসান হলেও কাজ তো করে দিতেই হবে।' বায়না নেওয়া প্রতিমা এত কম সময়ের মধ্যে ফের গড়ে তুলে মণ্ডপে পাঠানোই তাঁদের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।   এই পরিস্থিতিতে দিনরাত এক করে  কাজ করছেন তাঁরা।  যদিও এখনও পথের কাঁটা মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি-বাদলা।


মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন,  নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি থামতেই চাইছে না। তার পরেও রাত ৩টে অবধি চলছে কাজ । প্রতিমার গায়ের মাটি শুকিয়ে তাতে রঙের প্রলেপ দেওয়া রীতিমতো চ্যালেঞ্জের দাঁড়িয়েছে এই পরিস্থিতিতে।  আকাশে রোদের দেখা নেই। এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে তাঁদের আবেদন, সরকার তো চাষি থেকে শিল্পীদের ভাতা দিয়ে থাকে।  এবার যদি মৃৎশিল্পীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যআয় ।


সারাবছর এই সময়টাই মৃৎশিল্পীদের সবথেকে ভাল সময়। বলা যায় প্রতিমাশিল্পীদের লক্ষ্মী-মাস এটা।  কিন্তু এবার এত বড় বিপর্যয় কীভাবে সামাল দেবেন তা ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছেন না শিল্পীরা।  


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।   


আরও পড়ুন: কলকাতায় জরুরি অবতরণ চিনগামী বিমানের! তবুও মৃত্যু অসুস্থ কিশোরীর