সুনীত হালদার , হাওড়া : দীর্ঘ টালবাহানার পর গতকাল রাজ্যে এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশের রুপোলি শস্য। শুক্রবার সকাল থেকে হাওড়া পাইকারি বাজারে মিলছে বাংলাদেশি ইলিশ। খুচরো বাজারে যাচ্ছে মাছ। সব মিলিয়ে পুজোর আগে বাঙালির রসনাতৃপ্তির জোগান ষোলকলাপূর্ণ।
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতন ও নতুন পরিস্থিতি তৈরির পর পদ্মা থেকে এ বার পুজোয় ইলিশ এবার আর আসবে কি না, তা নিয়ে টানাপোড়েন ছিল। ভারত থেকে ডিম রফতানি হলেও বাংলাদেশ থেকে ইলিশ পাওয়া যাবে না, বলেই শোনা যাচ্ছিল। কারণ, বাংলাদেশের নতুন অন্তবর্তী সরকার জানিয়ে দিয়েছিল, বাংলাদেশের ইলিশে ‘অগ্রাধিকার’ সে দেশের মানুষেরই। তারপর রফতানি। তবে শেষ পর্যন্ত এ বারও পুজোর আগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ ভারতে রফতানির অনুমতি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০ মেট্রিক টন ইলিশ বেনোপোল এবং পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে রাজ্য়ে আসে। তারপর তা শুক্রবার সকালে, হাওড়ার পাইকারি বাজারে পৌঁছে যায়। সেখানে ডালা ভরে পসরা সাজিয়েছেন মাছ বিক্রেতারা। বিশ্বকর্মা পুজোর আগে পদ্মার ইলিশ ঢোকেনি। অন্যদিকে বঙ্গের উপকূলে সমুদ্র ছিল উত্তাল, মাছ ধরতে বের হতে পারেননি অনেক মৎস্যজীবীই। মাছ ধরতে নিয়ে আস্ত একটি ট্রলারই দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। প্রাণ হারান অনেক মৎস্যজীবী। এই পরিস্থিতিতে রান্না-পুজোয় বাংলার বাজারে ইলিশ সহজলভ্য ছিল না। তবে এবার ইলিশ - প্রেমীদের জন্য ভাল খবর। হাওড়ায় শুরু হয়ে গেল পদ্মার ইলিশ বিক্রি।
ইলিশের দাম
জানা যাচ্ছে, ৮০০-১২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকায়। খুচরো বাজারে তা আরও বশি দামে বিক্রি হতে পারে বলে জানিয়েছেন খুচরো বিক্রেতারা। এবারে বাংলাদেশ সরকার দেরি হলেও মোট ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ পাঠাতে রাজি হয়েছে। আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত এই মাছ রফতানি করার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের বাণিজ্য় মন্ত্রক।
তবে রফতানির ক্ষেত্রে যাতে সবরকম বিধি ঠিক ভাবে মানা হয়, সেদিকে নজর রাখা হবে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ রফতানি কোনও মতেই করা যাবে না। এছাড়া যাদের কাছে সরকারি অনুমোদন আছে, তারা ছাড়া কেউ সাব–কন্ট্রাক্টে রফতানি করতে পারবে না। তবে এই শর্তগুলি রেখেই প্রতিবাদ রফতানি হয় বলে জানা যাচ্ছে। এও শোনা যাচ্ছে, ভারতে ইলিশ রফতানি শুরু হতেই বাংলাদেশে বেড়ে গিয়েছে ইলিশের দাম।
আরও পড়ুন :