সুনীল হালদার, হাওড়া :  প্রতীকী শিরদাঁড়াকে থিম করে মণ্ডপসজ্জার কথা ভেবেছিল বেলেঘাটার গান্ধী মাঠ ফ্রেন্ডস সার্কল। কিন্তু শিরদাঁড়া নিয়ে হইচইয়ের মাঝেই থিম বদলে ফেললেন তাঁরা। সেই শিরদাঁড়ার জায়গা হয়েছে এখন মণ্ডপের পিছনে । আবর্জনার স্তূপে পড়ে এখন আরজি কর আন্দোলনের আবহে তৈরি মণ্ডপসজ্জার থিম শিরদাঁড়া। অন্যদিকে সেই শিরদাঁড়াকেই প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়েছে হাওড়ার সাঁতরাগাছির কল্পতরু স্পোর্টিং ক্লাব।


৪১তম বর্ষে তাদের এবারের থিম 'বাস্তবতা'। মণ্ডপে ঢোকার মুখেই তৈরি করা হয়েছে ২০ ফুট লম্বা প্রতীকী শিরদাঁড়া। প্রতিবাদের প্রতীক হিসাবে পুজোর মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়েছে মানুষের মেরুদণ্ড।  ২০ ফুট লম্বা প্রতীকী শিরদাঁড়ায় রয়েছে প্রতীকী প্রতিবাদ। সঙ্গে  মণ্ডপের গায়ে লেখা, 'মা আমি ডাক্তার হতে পারলাম না'।


একটি স্বপ্ন, সম্ভাবনার মৃত্যুকে নিজের শিল্পভাবনায় রূপ দিয়েছেন শিল্পী সৌরভ ঘোষ। তিনি জানান, তিলোত্তমার মৃত্যু তার শিল্পী সত্তাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। তাই তিনি মণ্ডপসজ্জাতেও নিয়ে এসেছেন তিলোত্তমার চলে যাওয়াকে। প্রতিবাদ করেছেন তাঁর সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে।  প্যান্ডেলে স্বপ্নের মোটিফ হিসাবে মুখ বাঁধা ছোট ছোট থলি ব্যবহার করা হয়েছে। যে স্বপ্ন প্রতিদিন বাস্তবতার আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। এর পেছনে কাঁকড়াকে মোটিফ হিসাবে দেখানো হয়েছে যা মানুষকে পেছন থেকে টেনে ধরে। শুধু তাই নয় সামাজিক অন্যায় দেখে মানুষের নির্লিপ্ততা বোঝাতে ছোট ছোট মূর্তির চোখে কালো কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানালেন শিল্পী।  


এখানে মা দুর্গার হাতে অস্ত্রের বদলে থাকছে আয়না। মানুষের বিবেককে জাগ্রত করতে এই প্রতীকী আয়না ব্যবহার করা হয়েছে বলে শিল্পী জানিয়েছেন। আর জি কর-কাণ্ডে প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে শিরদাঁড়া। এবার সেই শিরদাঁড়াকেই মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করে প্রতিবাদ জানানোর পথে হাঁটল সাঁতরগাছির এই ক্লাব।  


কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ চেয়ে প্রতীকী শিরদাঁড়া নিয়ে লালবাজার পর্যন্ত মিছিল করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের প্রতিবাদ শিহরণ জাগিয়েছিল সাধারণ মানুষের মধ্যেও। এবার সেই ভাবনারই অনুরণন বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবে। 


এর আগে  বেলেঘাটা গান্ধী মাঠ ফ্রেন্ডস সার্কলের পুজো মণ্ডপ থেকে সরেছে প্রতীকী শিরদাঁড়া। ইন্সটলেশনের আগেই প্রতীকী শিরদাঁড়ার জায়গা হয়েছে মণ্ডপের পিছনে আবর্জনায়। বদলে সেখানে শোভা পায় তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কাটআউট। বেলেঘাটা গান্ধী মাঠ ফ্রেন্ডস সার্কলের চেয়ারম্য়ান তৃণমূল ঘনিষ্ঠ রাজু নস্কর। পুজোর প্রধান উপদেষ্টা কুণাল ঘোষ। ফলে হঠাৎ ক্লাবের পুজো উদ্যো ক্তাদের প্রতীকী শিরদাঁড়া সরানোর সিদ্ধান্তে উঠছে প্রশ্ন।  


আরও পড়ুন - হবে সন্দীপ ঘোষের নার্কো অ্যানালিসিস ?