অর্ণব মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা: শনিবার থেকেই শহর এবং জেলায় প্রতিমা নিরঞ্জন শুরু হলেও, লেক কালীবাড়ির প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে রবিবার। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? কারণ জানালেন লেক কালীবাড়ির প্রধান সেবায়েত নিতাইচন্দ্র বসু। (Durga Puja 2024)


শহর থেকে জেলা, শনিবার বেশ কিছু জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিমা নিরঞ্জন। তবে লেক কালীবাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন হবে রবিবার।
লেক কালীবাড়ির প্রধান সেবায়েত নিতাইচন্দ্র বসু জানিয়েছেন, বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মেনে তাঁদের পুজো হয়। সেইমতো রবিবার হবে বিসর্জন। (Lake Kalibari)


বিজয়া দশমীর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে নিতাইচন্দ্র জানান, কথিত আছে দশমীর দিন মা দুর্গা কৈলাসে ফিরে যান। ফিরে যান কারণ, মাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে মহাদেব করেন কী? ওই দিন দেবীকে পান্তাভাত, নুন ছাড়া,কচুশাক ভোগ দেওয়া হয়। সম্ভবত এই কারণে দেওয়া হয়, যাতে কৈলাস অভিমুখে দীর্ঘ যাত্রাপথে মায়ের শরীর যেন সুস্থ, শীতল থাকে। যাঁদের অন্নভোগের প্রচলন নেই, তাঁরা চিড়ে, মুড়কি, দই, বাতাসা দেন ভোগে।


পাশাপাশি, উচ্চারণ এবং মুদ্রা প্রদর্শনে মাটি, পিতল, তামা বা কাঁসার বড় পাত্রের মধ্যে মন্ত্রপাঠ করে বিসর্জন দেওয়ার চল রয়েছে বলেও জানান নিতাইচন্দ্র। তিনি জানান, এর পর অপরাজিতার পুজো হয়। মন্ত্রপাঠ করার পর ধ্যানের মাধ্যমে সফল হলে, দর্পণ বিসর্জন দেওয়ার পাত্রে জলে মা দুর্গার পায়ের ছবি দেখতে পাওয়া যায়, যা মায়ের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ। এই আশীর্বাদ পেতে বহুকাল ধরেই দর্পণ বিসর্জন চলে আসছে বলে জানান তিনি।


নিতাইচন্দ্র আরও জানান, মায়ের মুখে পান দেওয়া, মায়ের মুখ মুছিয়ে দেওয়া, সিঁথিতে সিঁদুর, প্রদীপের তাপ মায়ের বুকে দেওয়া, কানে কানে আগামী বছর আসার কথা বলার চল রয়েছে। মা দুর্গা বাংলার ঘরের মেয়ে। কেউ কেউ পানের খিলিও ধরিয়ে দেন হাতে। কৈলাসে মায়ের আসার খবর পাঠানোর জন্য নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানোর প্রচলন ছিল জমিদার বাড়িতে। সন্ধেয় নদী বা গঙ্গায় মায়ের মূর্তি বিসর্জনের প্রথা রয়েছে, সেই মতোই হয়।


তিথি মেনে নবমীর পুজো হয় লেক কালীবাড়িতে। মা দুর্গা-সহ তাঁর সন্তানদের আরাধনা চলে। উপস্থিত হন ভক্ত-পূণ্য়ার্থীরা। গতকালও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। লেক কালীবাড়িতে এসে উপস্থিত হন শিল্পী সনাতন রূদ্র পাল।


আরও পড়ুন: Durga Puja 2024: চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনে বিচারের দাবি, ধূপ-মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন পুজো প্রাঙ্গনে