সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সমীরণ পাল, কলকাতা: পুজো যত এগোচ্ছে ততই পুজো অনুদানে না বলা ক্লাব ও পুজো কমিটির তালিকা ক্রমশ লম্বা হচ্ছে। রবিবারের পর সোমবারও পুজোর অনুদান নেবে না বলে জানিয়ে দিল বারাসাতের একটি ক্লাব। অন্যদিকে, অনুদান নিতে ইচ্ছুক ক্লাবগুলিকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে জমায়েতের ডাক দিয়েছেন কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান।

  


আন্দোলন, জাস্টিসের স্লোগান, রাত দখল, মিছিল এসবের মাঝেই দোরগোড়ায় এসে পড়েছে পুজো। আর সেই পুজোতেও এবার প্রত্যাখ্যানই প্রতিবাদের ভাষা সরোজিনী পল্লি কল‍্যাণ সমিতির পর এবার পুজো অনুদান প্রত্যাখ্যান করল, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের আরও এক ক্লাব। 


রাজ্য সরকারের পুজো অনুদান নেবে না বলে জানিয়ে দিল কলোনি মোড় অ্যাসোসিয়েশন। কলোনি মোড় অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ স্বপন কুমার বন্দোপাধ্যায় বলেন, 'যেখানে একটা নারীর নিরাপত্তা নেই, সেখানে দেবীর পুজো করার জন্য তাঁর অনুদান নিতে হবে, সেই অনুদান না নিলে নানারকম ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে, নানারকম প্রোপাগান্ডা করা হচ্ছে, এটাও ঠিক নয়।' 


আর জি কর-কাণ্ডের আবহে সম্প্রতি দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদান না নেওয়ার ঘোষণা করেছে হুগলির উত্তরপাড়ার ৩টি পুজো কমিটি। একই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে উত্তরপাড়া থানা এলাকার কোন্নগর মাস্টার পাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটিও।


আর এর পরই, পাল্টা পুজো অনুদান নিতে ইচ্ছুকদের জমায়েতের ডাক দিলেন কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস। হোয়াটসঅ্যাপে কোন্নগরের সব পুজো কমিটিকে তিনি মেসেজ পাঠিয়েছেন, কোন্নগর চলচ্চিত্র মোড়ে সন্ধে সাড়ে ৬ টায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের এই বছরের দুর্গা পুজোর অনুদান হিসাবে ৮৫ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য নিতে ইচ্ছুক সেই সকল ক্লাব সংগঠন এবং পুজো কমিটিগুলিকে নিম্নলিখিত স্থানে নিজ নিজ ক্লাব এবং পুজা কমিটির ব্যানার, পোস্টার নিয়ে জমায়েত গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। 


কোন্নগর পুরসভার তৃণমূল নেতা ও চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, 'এমন একটা ভাব দেখাচ্ছে যেন কত কিছু আমরা করে ফেলেছি সমাজের জন্য। যদি একটা নিরপেক্ষ ক্লাব করত তাহলে বুঝতাম। যে ক্লাবের ১০০ শতাংশ লোক হচ্ছে সিপিএম, কট্টরপন্থী সিপিএম তারা। খুন, ডাকাতি এমন কোনও কাজ নেই তারা করেনি।তারা যদি আজকে সমাজকে এই বার্তা দেয় মানব কেন?' 


আরও পড়ুন, আজ নবান্ন অভিযান কর্মসূচি, কলকাতায় আসতে গেলে, কোন রাস্তা ধরতে হবে?


এ প্রসঙ্গে হুগলি জেলা কমিটি এসএফআই সম্পাদক অর্ণব দাস বলেন, 'প্রতিবাদ করলেই যদি সিপিএম তকমা দিয়ে দেওয়া হয়, বা বামের তকমা দিয়ে দেওয়া হয়, বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তকমা দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আগামীদিনে প্রত্যেক তৃণমূলের নেতারা রাতের অন্ধকারে সিপিএমের ভূত দেখবে'। 


হুগলির পাশাপাশি, অনুদান প্রত্যাখ্যানের রাস্তায় হেঁটেছে মুর্শিদাবাদে লালগোলার মহিলা পরিচালিত কৃষ্ণপুর সন্ন্যাসীতলা পুজো কমিটিও। পুজোর অনুদান নেবে না বলে, লালগোলা থানাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন পুজো কমিটির সদস্যরা।


দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর-মজিলপুরের ৭ ও ১৪ নম্বর পল্লি সর্বজনীন শারদোৎসব কমিটিও ইতিমধ্যেই পুজোর সরকারি অনুদান না নেওয়ার ঘোষণা করেছে। এর আগে, অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে, দক্ষিণ কলকাতার হাইল্যান্ড পার্ক উৎসব কমিটি ও নদিয়ার বেথুয়াডহরি টাউন ক্লাব।  



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে